Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র

Mofizur Rahman
0

Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf - বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র

National University and Other University
Department of English
Honours 2nd Year
Introduction to Drama
বিস্তারিত নিচের পিডিএফ ফাইলে পাবেন।


Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary - বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র

(toc)

Life and Literary Works of John Millington Synge

John Millington Synge [1871-1909]
Born:- 16 April 1871.
Birth Place: Rathfarnham, County Dublin Ireland.
Nationality: Irish (British subject).
Occupation: Novelist, short story writer. playwright. poet, essayist.
Died: 24 March 1909 (aged 37).
Death Place: Elpis Nursing Home, Dublin, Ireland.

জন মিলিংটন সিঞ্জ এর জীবন ও সাহিত্যকর্ম


১৮৭১ সালে ডাবলিনের নিকটবর্তী রথকার্নহাম নামক স্থানে এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখে সিঞ্জ অনুগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হ্যাঁচ, পেশায় তিনি আইনজীবি ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দশ বছর বয়স পর্যন্ত স্কুলে না যেতে পারায় সিওকে গৃহেই শিক্ষা দেয়া হয়। এরপর ১৮৮৮-১৮১২ সাল পর্যন্ত সি ভাষা ও ইতিহাস বিষয়ে ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৮৯৯ সালে তাঁর সাক্ষাৎ হয় ডব্লিউ বি ইয়েট্স এর সাথে। তিনি তাকে শহর ছেড়ে আরান দ্বীপে চলে যেতে বলেন চর্চার জন্য। তাঁর পরামর্শে তিনি সেখানে চলে যান এবং সেখানকার নিম্ন শ্রেণীর লোকদের জীবন পর্যবেক্ষণ করেন। আরান পল্লীর সাধারণ কৃষক আর মৎস্যজীবি মানুষের আচার আচরণ, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা ইত্যাদি বিষয়সমূহ তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তাই পরে তাঁর লেখায় কোন দর্শন বা রাজনীতির ছোঁয়া দেখা যায় না।

জন মিলিংটন সিঞ্জ এর উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মাঝে রয়েছে

  1. "স্যাডো অব দ্য ম্যান।
  2. 'দ্য ওয়েল অব দ্য সেন্টস' 'রাইডার্স টু দ্য সী'
  3. 'দ্য টিনকার্স ওয়েডিং'।
  4. 'দ্য প্লেবয় অব ওয়েস্টার্ন ওয়ান্ড'।

সিঞ্জ তাঁর পুরোটা জীবন নাট্যকলার জগতে কাটিয়েছেন। এই বিখ্যাত নাট্যকার মাত্র ৩৮ বছর। বয়সে ১৯০৯ সালের ২৪ই মার্চ পরলোক গমণ করেন।

নাটকের শিরোনাম : রাইডার্স টু দ্য সী
মূল নাট্যকার: জন মিলিংটন সিঞ্জ (অনুবাদক: সৈয়দ আহমেদ রুবেল)

নাটকের বিশেষ বিশ্লেষণ/Explanation of The Drama


সিঞ্জ রচিত 'রাইডার্স টু দ্য সী' একটি একাঙ্কিকা নাটক। এক দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে তা। আরান দ্বীপের মৎস্যজীবি জেলেদের জীবনের নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই নাটক। এটি একটি ট্র্যাজিক কাহিনীর নাটক নয় বরং করুন কাহিনীর নাটক। কারণ এখানে অপ্রত্যাশিত কোন কিছু নেই বরং রয়েছে নিয়তির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সিজ দেখিয়েছেন যে, মানুষের জীবন মানেই হাজারো হাহাকারে পরিপূর্ণ একটি পাত্র যেখানে জলও রাখা যায়, বিষও রাখা যায়।

জীবন মানেই থাকবে দুঃখ-কষ্টের সমাহার। তাই বলে দুঃখ পেলেই হতাশ হওয়া যাবে না। হা ছাড়া যাবে না কোন মতেই। তাই এখানে আমরা দেখতে পাই যে, মারিয়া তার সকল পুত্র সন্তান। হারিয়েও সর্বশেষে বলে যে, নিয়তিকে মেনে নিতেই হবে। থেমে থাকার কিছু নেই। এভাবেই আবার শুরু করতে হবে আগামীর দিনগুলো।

কাহিনী সংক্ষেপ (Short Bangla Summary)


নাটকটি শুরু হয় ক্যাথলিন ও নোরার আলোচনার মধ্য দিয়ে। আলোচনার বিষয় হচ্ছে যে, এক পাদ্রী নোৱাকে একটি পুটলি দিয়ে গেছে আর বলে গেছে যে, এটি জলে পাওয়া এক মৃত ব্যক্তির। তারা পুটলি খুলে পরীক্ষা করে দেখে যে, এগুলো তাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই মাইকেলের। এই মাঝে তাদের মা মারিয়াকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখে তারা পুটলিটা লুকিয়ে রাখে। এরপর তাদের মা আসে। পরে আসে তাদের সর্বশেষ জীবিত ভাই বাটলি। সে আসে একটি দড়ির জন্য। সে যাবে মাছ ধরতে। কিন্তু মারিয়া বাঁধা দিলেও সে তা না শুনে চলে যায়।

লাল রঙা মাদী ঘোড়ায় চড়ে সে যাত্রা করে আর তার পেছন পেছন ছুটে ছাই রঙা বাচ্চা ঘোড়াটা। তারা ভুলে যায় তাকে কেক দিয়ে দিতে। তাই মারিয়া কেকটা নিয়ে ঝর্ণা পাড়ের দিকে যায়। তখন তার সাথে দেখা হয়। বাটলির কিন্তু সে দেখতে পায় যে, মাইকেল যেন বসে আসে ছোট বাচ্চা ঘোড়াটার উপর। এটা দেখে বাড়িতে এসে সে ক্যাথলিন ও নোরার সাথে কথা বলতে থাকে। এমন সময় একদল লোক বাটলির মৃতদেহ বহন করে নিয়ে আসে। তারা বলে যে, যখন সে উত্তরের পাহাড়ের উপর দিয়ে যাচ্ছিল তখন বাচ্চা ঘোড়াটা ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং সেখানেই সে মারা যায়। তাকে ঘরে নিয়ে আসা হয়। পবিত্র জল ছিটিয়ে দেয় মারিয়া। এরপর বিলাপ করতে থাকে সবাই এবং মারিয়ার বিলাপ দিয়েই নাটকটি শেষ হয়।

চরিত্র পরিচিতি/ Characters Identity)

  • মারিয়া: একজন বৃদ্ধা মহিলা। বাটলি, ক্যাথরিন ও নোরার মা।
  • ৰাটলি: মারিয়ার জীবিত বড় ছেলে।
  • ক্যাথলিন: মারিয়ার বড় মেয়ে।
  • নোৱা: মারিয়ার ছোট মেয়ে।
  • (জনৈক পুরুষ ও মহিলা বৃন্দ।

Riders to the Sea Translation /রাইডার্স টু দ্য সী মূল পাঠের অনুবাদ


দৃশ্যপট: পশ্চিম আয়ারল্যান্ডের একটি দ্বীপ। একটি কুঁড়ে রান্নঘর, সেখানে আছে মাছ ধরার জাল, সুতা কাটার চরকা, দেয়ালে ঠেস দিয়ে রাখা কিছু তক্তা ইত্যাদি। বিশ বছরের মেয়ে ক্যাথলিন, কের বানানোর কাজ শেষ করে এবং তা আগুনের উপর চুলায় রেখে তার হাত মুছল এবং চরকায় সুতা কাটা শুরু করল। একজন যুবতী, নোরা, দরজায় মাথা হেলান দিয়ে দাঁড়াল।

নোৱা: [ক্ষীণ কণ্ঠে) সে (তাদের মা, মারিয়া) এখন কোথায়?

ক্যাথলিন:  সে শুয়ে আছে, সৃষ্টিকর্তা তার মঙ্গল করুক, সম্ভবত সে ঘুমাচ্ছে। [নোরা খুব ধীর লয়ে আসল এবং একটি পুটলি বের করল তার গায়ে জড়ানো শালের নিচ থেকে।] [চরকায় দ্রুত সুতা কাটতে কাটতে| তোমার কাছে কি ওটা?

নোৱা: যুবক পাদ্রী এটা নিয়ে এসেছে। এখানে এমন কারো একটি শার্ট ও মোজা আছে যে কোনেগালে ডুবে মরেছে।
[ক্যাথলিন হঠাৎ করে থাকা থামান এবং শোনার জন্য মানা  ঝুকাল]
আমাদের দেখতে হবে এগুলো মাইকেলের কি-না। কিছুদিন তাকে (মারিয়াকে) সাগর তীরে তাকে (মাইকেলক) খুঁজতে দেখা যাবে।

ক্যাথলিন: এগুলো কেমন করে মাইকেলের হবে, নোরা? কেমন করে সে এত দূরে সেই উত্তরে যাবে?

নোৱা: যুবক পাদ্রী বলেছেন, এমন অনেক ঘটনা তিনি জানেন। তিনি বলেছিলেন, “তুমি নিজে বলতে পারো যে, ঈশ্বরের কৃপায় তার সুন্দর সৎকার হয়েছে যদি ওগুলো। মাইকেলের হয়, আর যদি ওগুলো মাইকেলের না হয় তবে তাকে (মারিয়াকে) কেউ যেন কিছু না জানায়, কারণ এতে সে কেঁদে কেঁদে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে।"
যে দরজা নোরা অর্থ খোলা রেখেছিল তা হঠাৎ দমকা হাওয়ায় খুলে গেল।

ক্যাথলিন: (চিন্তিত হয়ে বাইরে তাকিয়ে। তুই কি তাকে প্রশ্ন করেছিলি যে, তিনি আ বাটালিকে ঘোড়া নিয়ে গানওয়ের মেলায় যেতে নিষেধ করেছিলেন কি-না?

নোরা: তিনি বলেছেন, “আমি তাকে থামাব না।” তিনি আরো বললেন, “কিন্তু তুমি ভয় করো না, সে (মারিয়া) অর্থ রাত্রি প্রার্থনা করেছে এবং মহান ঈশ্বর তাকে নিঃশ্ব সম্বলহীন রেখে তার শেষ সম্বল কেড়ে নিবেন না।"

ক্যাথলিন: সাদা টিলা পাহাড়ের কাছে সাগরের কি খুবই খারাপ আবস্থা এখন, নোরা?

নোরা: মাঝারি রকমের খারাপ, ঈশ্বর আমানের সহায় হোন। পশ্চিমে খুব গর্জন শোনা যাচ্ছে এবং এটা আরো খারাপ হবে যখন স্রোত বাতাসের অনুকূলে বইতে থাকবে। [সে পুঁটলিটি নিয়ে টেবিলের কাছে গেল] আমি কি এটা [পুটলিটা] এখনি খুলব?

ক্যাথলিন: সম্ভবত সে [মারিয়া) এখন জেগে উঠবে এবং আমরা এটা খুলতে খুলতে আমাদের সামনে এসে যাবে সে। [টেবিলের কাছে এসে) এটা করতে অনেক সময় লাগবে যেহেতু আমরা দু'জনেই এখন কাঁদছি।

নোৱা: [ভেতরের দরজায় গেল এবং কান পাতল] সে [মারিয়া) এখন তার বিছানায় নাড়াচাড়া করছে। এক মিনিটের মধ্যেই সে এখানে এসে যাবে।

ক্যাথলিন: আমাকে মইটা দে-তো, ওগুলো শার্ট ও মোজা। আমি উপরের খর রাখার মাচায় রেখে দেবো। যখন সে আসবে আদৌ ওগুলো দেখতে পারবে না। সম্ভবত যখন জোঁয়ারে ভাঁটা পরবে সে উপকূলে যাবে তাকে (মাইকেলকে) খুঁজতে যে, সে পূর্ব থেকে স্রোতে ভেসে এসেছে না-কি। তারা চিমনির দেয়ালে মইটা ঠেস দিয়ে রাখল। ক্যাথলিন কয়েক ধাপ উপরে উঠল এবং পুটলিটা উপরের ঘর রাখার মাচায় লুকাল। মারিয়া ভেতরের ঘর থেকে আসল।

মারিয়া: (ক্যাথলিনের দিকে তাকান এবং অনুসন্ধিছু কিন্তু কৌতূহলের সাথে। আজ দিন ও সন্ধ্যার জন্য পর্যাপ্ত খর কি নেই?


ক্যাথলিন: কিছুক্ষণ পূর্বে চুলায় কেক ছ্যাকতে দিয়েছি নিচে কিছু পর ডুরে দিয়ে| বাটলির এটার (কেক) দরকার হবে যখন ডাঁটা পরবে আর যদি সে কনেমারা যায়। [নোরা খরগুলো তুলে এবং পাত্রের নিচে চুলার চার পাশে তা গুজে দেয়]

মারিয়া: (আগুনের কাছে একটি টুলের উপর বসল। সে বাটলি। আজ যেতে পারবে না, কারণ দক্ষিণে ও পশ্চিমে বাতাস বইতে শুরু করেছে। সে আজ যাবে না কারণ নিশ্চয় যুবক পাদ্রী তাকে ফেরাবে।

নোৱা: তিনি ডাকে থামাবেন না, মা। আমি ইমন সিমন, স্টিফেন ফিটি এবং কলাম সওনকে বলতে শুনেছি যে, সে যাবে।

মারিয়া: সে বাটলি) এখন কোথায়?

নোৱা: অন্য কোন নৌকা এ সপ্তাহে নোঙর তুলবে কি-না তা দেখতে গেছে সে। মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে। কারণ স্রোত বাঁক নিচ্ছে সবুজ উপদ্বীপের দিকে আর পাল গুটিয়ে গতি বদলাচ্ছে নৌকাটা।

ক্যাথলিন: পাথরগুলো পেরিয়ে কে যেন আসছে মনে হয়। [ বাইরে তাকিয়ে] নোরা, ও আসছে মনে হচ্ছে তবে ক্ষণিকটা ব্যস্ত মনে হচ্ছে ওকে।

বার্টলি: [ঘরের ভেতরে ঢুকে চারিদিকে তাকিয়ে বিষণ্ন ষরে বলে] কনেমারা থেকে কিনে আনা নতুন রশিটা কোথায়, ক্যাথলিন?

ক্যাথলিন: [নেমে এসে। নোরা, ওকে দে তো ওটা। সাদা তক্তার সাথে পেরেকে আটকিয়ে রাখা আছে। আজ সকালবেলায় ওটা ওখানে ঝুলিয়ে রেখেছি কারণ কালো রঙের শুয়োরটা ডাটা কামড়ে ধরে টানাটানি করতেছিল।

নোৱা: [বার্টলিকে দড়িটা দেয়] কি, এটাই তো না, বার্টলি?

মারিয়া: দড়িটা যেখানে ছিল সেখানে তেমনই রাখলে ভালো হবে, বাটলি। বাটলি দড়িটা নিল] আমি বলছি, এটা লাগবে এখানে। আগামীকাল সকাল বা পরশু সকাল বা সপ্তাহের যেকোন সকালে যদি মাইকেলের লাশ পানিতে ভেসে আসে তবে মহান ঈশ্বরের দয়ায় তাকে বড় একটি কবরে কবর দিবো।

বার্টলি: [দড়িটা দিয়ে কাজ শুরু করল। ঘুড়ীটার পিঠে চড়ার জন্য আমার কোন লাগাম নেই, এক্ষনি যেতে হবে আমাকে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কোন নৌকা পাওয়া যাবে না। আমি অনেককে বলাবলি করতে শুনেছি। মনে হয় ঘোড়াটার জন্য এবার ভালো একটি দাম পাওয়া যেতে পারে।

মারিয়া: লোকে কী ভাববে! এত নাম খরচ করে কনেমারা থেকে সাদা তক্তা আনিয়েছি কিন্তু কফিন বানানোর মতো কেউ থাকবে না। [তক্তার দিকে তাকাল স]

বার্টলি: কেমনে লাশ ভেসে আসবে শুনি? নয় দিন পার হয়ে গেছে। তাছাড়া আজকে আবার পশ্চিম দক্ষিণ দিক থেকে জোরে বাতাস প্রবাহ শুরু হয়েছে।

মারিয়া: না, পেলাম। সমুদ্রকে জাগিয়ে তুলেছে বাতাস। চাঁদের বিপরীতে তুই যেন একটি মাত্র তারা। তোর একশ বা হাজার ঘোড়া থাকলেও, যেখানে তুই আমার একটি মাত্র জীবিত ছেলে সেখানে ঐ হাজার ঘোড়ার মূল্যের বিনিময়ে কী হবে আমার?

বার্টলি: [লাগাম বানাতে থাকে ও ক্যালিনকে লক্ষ করে বলে] তুই প্রতিদিন নেমে গিয়ে লক্ষ রাখবি যাতে ফসলগুলো কোন ভেড়ার পাল নষ্ট না করতে পারে। আর শোন, যদি পাইকার ভালো দাম দিতে চার তবে বেচে দিবি কালো পায়ের শুয়োরটা।

মারিয়া: ওর মতো একজন বাচ্চা মেয়ে কীভাবে দর কষাকষিতে ভালো দাম পেতে পারে? বার্টলি এভাবেই যদি পশ্চিমা বাতাস আগামী অমাবস্যা পর্যন্ত বইতে থাকে তবে ক্ষার বানানোর জন্য নোরাকে নিয়ে তুমি আরেক বোঝা আগাছা কুড়িয়ে রেখো। খুবই কষ্টকর হয়ে গেল, কপালটাই খারাপ, আজ থেকে সংসারে কাজ করার মতো একজন পুরুষ ছাড়া আর কেউ নেই।

মারিয়া: আমাদের কপালে আগুন ধরবে সেদিন যেদিন তুইও পানিতে ডুবে মরবি। আমার যথেষ্ট বয়স হইছে। এক পা যেন কবরে গিয়েই রয়েছে। এই মেয়েদের নিয়ে কীভাবে আমি বেচে থাকব বাকিটা জীবন! [লাগামটা রেখে বার্টলি পুরাতন একটি কোট রেখে একই ফ্লানেলের তৈরি একটি নতুন কোট পরে নিল।]

বার্টলি: [নোরাকে সে (এখানে নৌকাকে বা মাদার শিপকে বুঝানো হয়েছে) কি ঘাটে এসেছে?

নোরা: [বাইরের দিকে তাকিয়ে। মনে হয় উপদ্বীপ পেরোচ্ছে আর পাল নামিয়ে নিতেছে।

বার্টলি: (মানিব্যাগ ও তামাক হাতে নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আধা-ঘণ্টার মধ্যেই আমাকে ঘাটে পৌঁছাতে হবে। আমার ফিরে আসতে দুই, তিন দিন লাগবে। তবে পরিবেশ খারাপ থাকলে চার দিনও লাগতে পারে বলে মনে হচ্ছে।

মারিয়া: [আগুনের দিকে ঘুরে গায়ে শাল জড়াল] ওহ। কি নিষ্ঠুর! কি নির্মম। একজন বুড়ি লোকের একটি কথাও শুনছে না, যে বুড়ি তাকে সমুদ্র থেকে বাঁচাতে উদগ্রিব।

ক্যাথলিন: যে ছেলে ঝাসে জোয়ান সেই তো সাগরে যাবে। তাছাড়া একজন বুড়ির ঘ্যানর ঘ্যানর কার ভালো লাগবে?

বার্টলি: [লাগাম হাতে নিয়ে] আমাকে এখনি যেতে হবে। আমি লাল রঙা ঘুড়ীটায় চয়ে যাব। তার পেছনে পেছনে যাবে ছাই রঙের বাচ্চা ঘোড়াটা। ঈশ্বর তোমাদের মঙ্গল করুন। [সে বেরিয়ে গেল]।

মারিয়া: [সে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলে কেঁদে ওঠে| চলে গেল, হায় ঈশ্বর আমাদের সহায় হও! মনে হয় আর কখনো এর সাথে দেখা হবে না। হায়। চলে গেল, সামনের আমাবস্যায় আমার আর কোন ছেলে বেঁচে থাকবে না এই পৃথিবীতে।

ক্যাথলিন: দরজার সামন খেতে যখন ও এদিকে তাকিয়েছিল তখন ওকে আশির্বাদ করলে না কেন? বাড়ির সবকিছুই তো আজ প্রাণহীন মনে হচ্ছে; ওরকম অলুক্ষণে কথাগুলোর না বললে পারতে না?
[মারিয়া আনমনে চিমটা দিয়ে আগুন নাড়াতে থাকে]

নোরা: [ওর দিকে তাকায়] তুমি কি খেয়াল করছ? তুমি জ্বালানি সরাচ্ছ কেক থেকে।

ক্যাথলিন: [সে কেঁদে ওঠে ঈশ্বর আমাদের সহায় হোক, নোৱা। ওকে কেকটা দিতে ভুলে গেছি আমরা। [সে আগুনের কাছে আসল]

নোৱা: সারাটা রাত বাইরে কাটাবে ও সকাল থেকে কিছুই খায়নি। নির্ঘাত ও মারা যাবে।

ক্যাথলিন: [চুলা থেকে কেকটা নিল] নিশ্চয় মারা যাবে ও। বাড়িতে একজন বুড়ি যদি সব সময় এমন ঘ্যানরঘ্যানর করে তো কার মাথা ঠিক থাকে।
[মারিয়া টুলে বসে দুলতে থাকে, কেকের একটি অংশ কেটে একটি কাপড়ে পেচিয়ে সে মারিয়াকে দেয়]
এক্ষুনি তুমি ঝর্ণা কূপের কাছে যাও আর গিয়ে ওকে দাও এটা। যাও ওর সাথে দেখা করো, দূর করো তোমার অশুভ কথার অভিশাপ। ওর মনটা ভালো করার জন্য তুমি ওকে বলবে, “তোমার যাত্রা মঙ্গলকর হোক।”

মারিয়া: কেকটা হাতে নিয়ে। আমি কি ওর নাগাল পেতে পারব?


ক্যাথলিন: দ্রুতই বেরিয়ে গেলে পেতে পারো।

মারিয়া: (ছলছল চোখে) কপাল পোড়া আমার। আমাকে এখন হেঁটে যেতে হবে।

ক্যাথলিন: (উদ্বিগ্ন হয়ে তার দিকে তাকিয়ে) পথ চলার লাঠিটা দে তো নোরা, তা না হলে সে পাথরে হোচট খেয়ে পরে যেতে পারে।

নোৱা: কোন লাঠিটা?

ক্যাথলিন: কনেমারা থেকে মাইকেল যেটা কিনে এনেছিল।

মারিয়া: [লাঠিটা নিয়ে] এই সুবিশাল পৃথিবীতে ছেলে-মেয়েদের জন্য সব রেখে বুড়োর বিদায় নেয়, এখানে তারাই যেন বুড়োদের জন্য সব ফেলে চলে যাচ্ছে [সে ধীরে ধীরে বেরিয়ে পরে। নোরা মইটার দিকে যায়।]

ক্যাথলিন: একটু পরে, হয়তো সে এখনি ফিরে আসতে পারে। সৃষ্টিকর্তা তার সহায় হোক সে এতটাই মর্মাহত যে, কখন কি করে বসে, বলা যায় না।

নোৱা: ঝোপটা কি সে পেরিয়েছে এখন?

ক্যাথলিন: মনে হয় চলে গেছে। জলদি ফেল ওটা, ঈশ্বর জানেন এখনি সে ফিরে আসে কি-না।

নোৱা: [মাচা থেকে পুটলিটা নামাতে থাকে] পাদ্রী বলেছেন, আগামীকাল তিনি এ পথ ধরেই যাবেন, নিশ্চিত যদি ওগুলো মাইকেলের হয় তবে তাকে জানাতে বলেছেন।

ক্যাথলিন: [পুটলিটা হাতে নিয়ে] এগুলো কি করে পাওয়া গেছে তা কি তিনি বলেছেন কিছু?

নোৱা: [মই বেয়ে নামতে নামতে] পাদ্রী বলেছেন, চোরাই মদ নিয়ে দু'জন মাল্লা দাড় টানছিল, তখন তারা উত্তরের কালো চরাঞ্চল পেরুচ্ছিল। তখন একজনের দাড়ে মৃতদেহটা আটকে যায়।

ক্যাথলিন: [পুটলিটা খূলতে চেষ্টা করে] চাকুটা দে তো, নোরা। নোনা পানিতে ভিজে গিটা এমনভাবে কসেছে যে, তুই এটা এক সপ্তাহেও খুলতে পারবি না।

নোৱা:  [ চুরিটা দিয়ে] আমি যতদূর জানি ডোনেগাল সে তো অনেক দূরের পথ।

ক্যাথলিন: [দড়িটা কেটে অবশ্যই] কিছুদিন পূর্বে যে লোকটা এই ছুরিটা বেচে গেল, সে বলেছিল, পাড়ারগুলোর নিকট হতে হাঁটতে থাকলে ডোনেগাল পৌঁছাতে সপ্তাখানেক লাগতে পারে।

নোরা: কিন্তু লাশ ভেসে যেতে কত দিন লাগতে পারে?
[ক্যাথলিন পুঁটলি খুলে একটি শার্টের টুকরা ও মোজা বের করল। ওরা সেগুলো কৌতুহলের সাথে দেখতে লাগল ।

ক্যাথলিন: [ক্ষীন কণ্ঠে] হায়। ঈশ্বর আমাদের সহায় হোক। নোৱা, এগুলো মাইকেলের কি-না  তা নিশ্চিত হওয়া কি কঠিন নয়?

নোৱা: একটু অপেক্ষা করো, হুক থেকে এর একটি শার্ট নিয়ে আমি আর এই দু’টো ফানের মিলিয়ে দেখি। [একপাশে ঝুলিয়ে রাখা কিছু কাপড় যে নেড়ে দেখতে থাকে] কই, এর কোন শার্ট তো এখানে নাই। কোথায় রাখা আছে ক্যাথলিন?

ক্যাথলিন: আচ্ছা, মনে পড়েছে, আজ ভোরবেলায় বাটিলি ওটা পরেছে। কারণ লবন দো ওর শার্টটা নষ্ট হয়ে গেছে [ঘরের কোণার দিকে দেখিয়ে] একই কাপড়ের তৈরি আমার কিছু কাপড় ওখানে রয়েছে। আন তো দেখি, ওটা দিয়েই হবে। [নোরা ওটা নিয়ে আসার পর ওরা তা মিলিয়ে দেখে]।

: কাপড় তো একই মনে হচ্ছে নোরা! তবে গালওয়ের দোকানগুলোতে একই কাপড়ের অনেক থানও তো রয়েছে। তাছাড়া মাইকেলের মতো অনেকেই একই কাপড়ের শার্ট কি বানাতে পারে না?

নোৱা: [মোজাটি হাতে নিয়ে শেলাই গুনে। এরপর আর্তনাদে ফেটে পরে।] এটা মাইকেলের, ক্যাথলিন, এটা মাইকেলের ঈশ্বর ওর আত্মায় শান্তি দান করুন। তিনিই জানেন এখন কি হবে, বাটলি এখন সাগরে গেছে।

ক্যাথলিন: [গুনে দেখে] হ্যাঁ, হ্যাঁ এটাই [কেঁদে] ওহ! নোরা চিন্তা করা যায়? ও সুদূর উত্তরের ভেসে গেল, হায়! এখন এর জন্য বিলাপ করার মতো কেউ রইল না শুধু খেচর কালো ডাইনি ছাড়া!

নোরা: [টলতে টলতে সে কাপড়গুলো বাহুডোরে ধরে] ওহ। কী দুঃসহ! দাঁড় টানায়, মাছ ধরায় এমন পাকা মানুষের কোন অবশিষ্ট্য নেই কেবল জামার ও মোজার এই টুকরাগুলো ছাড়া।

ক্যাথলিন: [সামান্য থেমে] সে (মারিয়া) কি আসছে, নোরা? মনে হয় পথে কোন শব্দ শুনতে পেলাম।

নোৱা: [বাইরের দিকে তাকিয়ে] হ্যাঁ, সে-ই আসছে, ক্যাথলিন। প্রায় দরজা পর্যন্ত এসেগেছে।

ক্যাথলিন: [সামান্য থেমে] সে আসার পূর্বেই ওগুলো সরিয়ে ফ্যাল। মনে হচ্ছে বার্টলিকে আশীর্বাদ করার পর সে সামান্য শান্তি পাচ্ছে। বার্টলি সাগর থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত ওকে কিছুই বলা যাবে না।

নোৱা: [পুটলিটা পুনরায় বাঁধতে ওকে সাহায্য করে] এগুলো ঘরের এই কোণায় রেখে দেই?
[ওরা পুটলিটা চিমনির কোথায় একটা গর্ভে রেখে দিল। ক্যাথলিন আবার চরকার কাছে চলে গেল।
আমি যে এতক্ষণ কাঁদছিলাম সে কি তা বুঝতে পারবে, ক্যাথলিন?

ক্যাথলিন: দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে বসে থাক, যাতে আলো না পরে তোর মুখের উপর।
[দরজায় পিঠ লাগিয়ে বসে থাকে নোরা, মারিয়া খুব ধীর গতিতে ঘরে ঢুকে কারো দিকে না তাকিয়ে আগুনের পাশে একটি টুলের উপর বসে পরে। মেয়েরা একে অন্যের দিকে চোখ চাওয়া-চাওয়ি করে। এরপর নোরা কেকের দিকে ঈশারা করে।]

[কতক্ষণ চরকায় সুতা কাটার পর] তুমি কেকটা ওকে দিতে পারনি?
[না তাকিয়েই মারিয়া বিলাপ শুরু করে।

তুমি ওকে যেতে দেখনি?
[মারিয়া বিলাপ করতেই থাকে]

[ একটু অস্থির হয়ে] ঈশ্বর তোমাকে মাফ করুন। ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বিলাপ করে কোন লাভ আছে? যা দেখেছ স্পষ্ট করে বলে ফেল। আমি জীগাচ্ছি, তুমি কি বার্টলির সাথে দেখা করতে পেরেছিলে?

মারিয়া: [ভগ্ন কন্ঠে] আজ আমার বুক ভেঙ্গে গেছে।
ক্যাথলিন: [পূর্বের মতোই] তুমি কি বার্টলিকে দেখেছ?
মারিয়া: এক ভয়ানক জিনিস দেখেছি আমি।


ক্যাথলিন: (চরকা থেকে বাইরে তাকিয়ে] ঈশ্বর তোমার করুনা করুন। ও-তো দ্বীপের ওপাল দিয়ে লাল ঘুড়ীটায় চড়ে যাচ্ছে, আর ওর পেছন পেছন যাচ্ছে ছোট বাচ্চা ঘোড়াটা।

মারিয়া: [চমকে উঠল, মাথা থেতে শালটা পরে গেল। তার সাদা চুলগুলো নজরে পরল। ভয়ার্ত কন্ঠে বলল। কী, ছাই রঙ্গা ছোট বাচ্চা ঘোড়াটা যাচ্ছে ওর পিছে পিছে.. 

ক্যাথলিন: [আগুনের কাছে আসল) এমন কি দেখেছ, যা তোমাকে যন্ত্রনা দিচ্ছে?

মারিয়া: [খুব আস্তে আস্তে কথা বলতে থাকল। ছেলেকে কোলে নিয়ে নববধু, ডারা যে ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছিল এক মৃত ব্যক্তির, যে কোলে এক ছেলেকে নিয়ে আছিল, তেমন দৃশ্য দেখেছি আমি। এরপর কেউ আমার মতো এমন ভয়ানক কোন কিছু দর্শন করেনি কখনো।

ক্যাথলিন ও নোরা:  কি দেখেছ? [বৃদ্ধা মায়ের সামনে ভারা হাটু গেরে বসন]

নোৱা: কি দেখেছ, বলো আমাদের?
 মারিয়া:  আমি ঝর্ণা কূপের কাছে পৌঁছানোর পর, প্রার্থনা করছিলাম তখন বার্টলি লাল ঘুড়ীটার পিঠে চরে আসল। তাকে অনুসরণ করছিল ছাই রঙের বাচ্চা ঘোড়াটা।
[সে কিছু যেন না দেখার ইচ্ছা পোষণ করে হাত দিয়ে মুখ ঢাকল]
হায়! ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন, নোরা.....

ক্যাথলিন: কি দেখেছ তুমি?

মারয়া: মাইকেলকে!

ক্যাথলিন: [বিনম্রভাবে] না, এ হতে পারে না, তুমি মাইকেলকে দেখনি। বহুদূর উত্তরে ওর লাশ পাওয়া গেছে। মহান ঈশ্বরের দয়ায় খুব সুন্দরভাবেই ওর লাসের দাফন হয়েছে।

মারিয়া: [একটু বেপরোয়াভাবে] না, আমি আজই ওকে ছাই রঙের ছোট ঘোড়াটায় বসে যেতে দেখেছি। প্রথম বার্টলি এলো লাল ঘুড়াটায় চড়ে, আমি ওকে আশীর্বাদ করতে চাইলাম, 'শুভ হোক তোর যাত্রা' বলে। কিন্তু আমি বলতে পারলাম না, কথাগুলো যেন গলার তলায় আটকে দেন। এরপর ও বলল, "ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুক' আর চলে গেল। আমি কোন কিছুই বলতে পারলাম না ওকে। এরপর কান্না ভেজা নয়নে তাকিয়ে দেখলাম মাইকেল চড়ে আছে ছাই রঙা ছোট ঘোড়াটায়। ওর পরনে রয়েছে সুন্দর পোশাক, পায়ে ওর নতুন চকচকে জুতো।

ক্যাথলিন: [কান্না করতে করতে] আমরা মনে হয় আজ থেকেই নিঃশ্ব হয়ে গেলাম। একদম শেষ হয়ে গেলাম।

নোরা: পাদ্রী কি বলেননি, মহান সৃষ্টিকর্তা তার বুক খালি করবেন না একমাত্র জীবিত পুত্রকে কেড়ে নিয়ে?

মারিয়া: [নীচু গলায় স্পষ্টভাবে] হারা ও সাগরের কি-ই বা জানে..... বার্টলি এবার হারিয়ে যাবে ঔ রাক্ষসী সাগরের বুকে। তোরা যা.. ইমনকে ডেকে আন। ও এসে আমার জন্য সাদা তক্তাগুলো দিয়ে কফিন বানাক। আমিও আর বাঁচতে চাই না। স্বামী ছিল, শশুর ছিল, তরতাজা ছয়টি ছেলে ছিল চরম যন্ত্রনার সাথে ওদের প্রসব করেছি আমি। হায়! ওদের কারো লাশ পাওয়া গেছে, কারো দেখা মেলেনি... সবাই আজ নাই হয়ে গেছে.... সবাই। স্টিফেন ও শ্যান তুফানে পরল, আর গোল্ডেন মাউথের উপসাগরে হারিয়ে গেল ওদের লাশ। ঘরের এই দরজার মধ্য দিয়েই। একটি তক্তা করে নিয়ে আনা হয়েছিল ওদের লাশ। [সে থামল কিছুক্ষণের জন্য। পেছনের দরজা দিয়ে কিছু একটা শব্দ শুনতে পেয়ে চমকে উঠল মেয়েরা। 

নোরা: (ফিসফিস করে। মনে হয় সাগর পাড়ে কেউ কান্না-কাটি করতেছে!

মারিয়া: [ কিছু না শুনে বলতে থাকল কোন এক অন্ধকার রজনীতে সাগরে ভেসে গেল সীমাস, এরপর তার বাবা, এরপর তারও বাবা গেল ভেসে। দিন হবার পর ওদের কোন হদিস পাওয়া গেল না। এর কিছু দিন পর প্যাঁচ মারা গেল নৌকা উল্টে। বাটলি তখন দুধের শিশু। আমি ওকে কোলে করে বসেছিলাম। তখন দুই, তিন, চারজন করে করে মেয়েরা আসল। চুপচাপ তারা চলে গেল শুধু যাওয়ার সময়। তারা ক্রুশ দেখাচ্ছিল। বাইরে তাকালাম, ওদের পেছনে পুরুষ লোকেরা ছিল, তাদের হাতে লাল কাপড়ে মোড়ানো কিছু ছিল, তা থেকে পানি ঝরছিল ফোঁটায় ফোঁটায়। সেদিন ছিল একদম শুষ্ক একটি দিন। তারপরেও দরজা পর্যন্ত জলের চিহ্ন লেগেছিল, নোরা।

[সে দরজার দিকে হাত বারিয়ে থাকল। ধীরে ধীরে দরজা খুলে গেল, বৃদ্ধারা দরজার সামনে ক্রশ দেখাতে দেখাতে মঞ্চে প্রবেশ করে হাটু গেরে বসল। আর মাথায় তারা ধারণ করল লাল কাপড়।]

মারিয়া: স্বপ্নাতুরের মতো করে ক্যাথলিনকে বলতে লাগল। প্যাচ, মাইকেল, না-কি অন্য কেউ? এ

ক্যাথলিন: বহু দূর উত্তরে মাইকেলের লাশ ভেসে উঠেছিল, কি করে সম্ভব যে, সে এখানে আসবে?

মারিয়া: লাশ হয়ে বহু দূর চলে যাওয়ার ক্ষমতা আছে মনে হয় যুবাদের। তাছাড়া এটা মাইকেল বা অন্য কেউ তা-ই বা কীভাবে নিশ্চিত হতে পারে ওরা। এমন বাতাসে নয় দিন সাগরে কোন লাশ থাকলে, স্বয়ং মা নিজেও তার সন্তানকে চিনতে পারবে না।

ক্যাথলিন: এতে কোন সন্দেহ নেই, এটা মাইকেলই হবে। কারণ উত্তর থেকে ওরা কিছু ছেড়া কাপড় পাঠিয়েছিল। ঈশ্বর এর সহায় হোক।
[ও মাইকেলের কাপড়গুলো মারিয়াকে দিল। আস্তে করে মারিয়া উঠে কাপড়গুলো নিল। নোরা বাইরেরা দিকে তাকাল।]

নোযরা: মনে হয় ওরা কোন কিছু বয়ে আনতেছে। এটার গা থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি করছে। বড় বড় পাথরগুলোর উপর সে পানির দাগ লেগে যাচ্ছে।

ক্যাথলিন: [চুপিচুপি আগত নারীদের] বার্টলির লাশ।

একজন নারী: নিঃসন্দেহে সে-ই। ঈশ্বর ওর আতায় শান্তি দিন। 
[দু'জন যুবতী নারী ঘরে ঢুকে টেবিল আনল আর পুরুষ লোকগুলো পালে জড়িয়ে ডাক্তায় বহন করা বাটলির লাশটা রাখল]

ক্যাথলিন: [কর্মব্যস্ত যুবতীদের] ও কেমন করে ডুবেছিল?

একজন নারী: ছাই রঙ্গা ছোট বাচ্চা ঘোড়াটা ওকে ধাক্কা দেয় আর ও সাগরে পরে যায়। সানা পাহাড়ের গায়ে যেখানে পাহাড় সমলম ঢেউ আছড়ে পরে সেখানে ওর লাশ ভেসে উঠেছিল।

[মারিয়া লাশটার নিকটে এসে টেবিলের সামনে হাঁটু গেড়ে বসল। মৃদু স্বরে নারীর বিলাপ করতে লাগল। ক্যাথলিন ও নোর টেবিলের জন্য প্রান্তে ও পুরুষের। দরজার কাছে হাঁটু গেড়ে বসল।

মারিয়া: [কারো দিকে না তাকিয়ে মুখ তুলল। আজ সাবই হারিয়ে গেল, সমুদ্র আর কিছুই করতে পারবে না আমার....... যখন দক্ষিণ দিকে ভূষন উঠবে, পূর্ব-পশ্চিমে উঠনে পাহাড়সম ঢেউ তখন আর আমাকে কেঁদে কোন প্রার্থনায় বসতে হবে না। বারবার মৃত্যুলোকের শেষ পর্বে আমাকে আর অমানিশার পবিত্র জন্ম সংগ্রহ করতে হবে। না। অন্যান্য মাহিলারা যখন বিলাপ করবে তখন আমাকে আর কোন দিন সাগর নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। [ নোরাকে পবিত্র জলের পাত্রটা আন তো, নোরা। [ নোৱা এটা দিল)।

”””: (বার্টলির পায়ের কাছে মাইকেলের কাপড় রাখল ও তার লাশের উপর পবিত্র জ ছিটিয়ে দিল। বাউলি, আমি ঈশ্বরের নিকট তোর জন্য প্রার্থনা করিনি তা নয়। কালো রাতের প্রার্থনায় আমি কি বলেছি তা তুই জানিস না, প্রার্থনা করিনি ত নয়। আজ গভীর বিশ্রাম নেব খুবই বিশ্রাম সময় হয়েছে আমার। মৃত্যুপর্বের দিন শেষে যদি পাই মাত্র একটি বাসি রুটি আর মাছ, তো তাই খেয়ে আমি গভীর ঘুমে প্রাচ্ছন্ন হবো।
[হাঁটু গেড়ে বসে ক্রুশ এঁকে প্রার্থনা করতে লাগল]

ক্যাথলিন: [একজন বৃদ্ধকে] ইমন ও আপনি মিলে আগামীকাল ভোরে একটি কফিন বানিয়ে দিবেন। মা, মাইকেলের জন্য নতুন কিছু তক্তা আনিয়েছিল। ঈশ্বর এর মঙ্গ করুন। যাহোক, কাজ শেষে বা করতে করতে আমার তৈরি নতুন কেকটা খেয়ে পারবেন আপনারা।

[মারিয়া ধীরে ধীরে উঠল, মাইকেলের কাপড়গুলো লাশের পাশে রাখল এবং শো পবিত্র জলটুকু ছিটিয়ে দিল]

নোরা: [চুপিচুপি ক্যাথলিনকে] আজ সে শান্ত, স্থির; তবে মাইকেল যেদিন মারা যায় সেদিন সে প্রচণ্ড কান্নাকাটি করেছিল, সে কান্নাকাটির শব্দ হয়তো বর্গা-কূপের নিকট হতেও শোনা গেছিল। আমার মনে হয় সে মাইকেলকেই বেশি ভালোবাসত, কেউ কি তা খেয়াল করেছে?

ক্যাথলিন: [আস্তে আস্তে স্পষ্ট সুরে] এটা স্বাভাবিক ব্যাপার যে, একজন বুড়ো মানুষ খুব দ্রুতই ক্লান্ত হবে। তাছাড়া এই নয় নিন কি সে বিলাপ করে বাড়িটা ভারী করে তোলেনি?

মারিয়া: [জলের শুন্য পাত্রটি উল্টিয়ে রাখল এবং বাটলির পায়ের কাছে হাত রাখল] জীবন খেলা সাঙ্গ করে সবাই আজ একত্রিত হয়েছে। বাটলির আত্মায় ঈশ্বরের কৃপ বর্ষিত হোক। মাইকেল, সীমাস, প্যাঁচ, স্টিফের ও শানের আত্মার উপরো ঈশ্বর্যে কৃপা বর্ষিত হোক। মাথা নুইয়ে আমার, নোরার, ধরার সকলের আত্মায় বর্ধি হোক তাঁর দয়ার রহমত।

[সে থামল, মহিলাদের বিলাপ কিছুটা বাড়ল, আবার কমে গেল।

”” : [আবার বলতে শুরু করল। ঈশ্বরের পরম দয়ায় সেই--উত্তরে মাইকেলের মূতো যথার্থ দাফন-কাফন হয়েছে। সাদা তক্তা দিয়ে সুন্দর সুগঠিত করে বানানো হয়ে বাটলির কফিন, গভীর একটি কবরে হবে ওর ঠাই। এর থেকে বেশি আর বি চাওয়ার থাকে? চিরদিন কেউ-ই বেঁচে থাকবে না, আমাদের এতেই তুষ্ট থাকবে হবে আমৃত্যু।

[সে হাঁটু গেড়ে বসল। আস্তে আস্তে পর্দা পরল।]

Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - Riders to the Sea by J. M. Synge Bangla Translation and Summary Pdf- বাংলা অনুবাদ, সামারি ও চরিত্র - 

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!
close