শীতার্ত শালিক (এক টুকরো রোদ) - ৪

Mofizur Rahman
0

 শীতার্ত শালিক (এক টুকরো রোদ) - ৪

শীতার্ত শালিক (এক টুকরো রোদ) - ৪

শীতার্ত শালিক

কয়েকদিন হতে কুয়াশার চাদর চারিদিক ঢেকে রেখেছে। রাতের সব কুয়াশা গাঢ় হয়ে সকালের সবটুকু আলো কেড়ে নিতে চায়। রাস্তার পাশে ইলেকট্রিক পোষ্টের বাতির আলো ফুটপাত অবধি পৌঁছতে পারে না। বাতির চারপাশে কুয়াশার আবরন ঝাপসা আলোকেও অদৃশ্য করে দিতে ব্যস্ত। তবুও আঁধারের ভেতর ঐ কয়টি নিয়নবাতি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না সবকিছু যেন ঘুমিয়ে পড়া নগরীর নিঃশব্দতার ভেতর কুয়াশার প্লাবনে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সকালের আলো যখন রাতের আঁধারকে হারিয়ে দিতে চায় কুয়াশার তখন স্থির থাকতে পারে না। আলোর সাথে যেন প্রতিযোগিতায় নেমে যায় যতই বাধা দেয় ভোরের আলোকে ততই স্পষ্ট হয়ে উঠে ঘন কুয়াশার জোয়ার। সকালটা তখন আর সকাল থাকে না। যেন কুয়াশার রাজ্য।

আঁধার কেটেছে সত্যি, তবুও আশেপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে শীত, কনকনে হাড় কাঁপানো শীত। এসময়ে ভোরে উঠতে হয় মাসুদকে শেভ, দাঁত ব্রাশ, গোসল আর নাস্তা সেরে সকাল আটটার আগে অফিসে পৌঁছতে হয় রাস্তায় রিক্সা ছাড়া যানবাহন তেমন একটা নামে না তখনও। প্রায় রিক্সা চালকের নাক কান বাধা মাফলার কিংবা গামছা দিয়ে। দু'একজন ঠংঠাং বেল বাজিয়ে পাশ নিয়ে ধীর গতিতে চলে যায়। সামনের লাইট জ্বালিয়ে টেক্সি একটি এসে দাঁড়ায় চালক মাসুদের দিকে তাকায়, কোন সাড়া না পেয়ে টান দেয় আবার।

সে টেম্পোর জন্য অপেক্ষা করে। এখন টেম্পোতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা ঠাসাঠাসি লোক বসায় ঠান্ডা একটু কম লাগে, রিক্সার মত কুয়াশা খেতে হয় না। টেক্সিতে উঠলেতো কথা নেই, কুয়াশাতো ঢুকবে, গতির সাথে সাথে বাতাসে হিমশীতল করে তুলবে। কিছুক্ষন দাঁড়ানোর পর হেড লাইট জ্বালিয়ে কুয়াশা ভেদ করে টেম্পো একটি আসে। মাসুদ হাতে দেখালেও থামে না; সীট খালি নেই পেছনে নিয়েছে দু'জন কিন্তু সবার মাথা ভেতরে। টেম্পোটি ভোঁ ভোঁ আওয়াজ তুলে দেরি হয়ে যাচ্ছে। আর দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক হবে না ভেবে রিক্সায় উঠে পড়ে, হুড ফেলে দেয় চালককে দেখে শুনে চালানোর কথা বলে রিক্সা যতই এগিয়ে যায় কুয়াশার পাহাড় যেন ক্রমশঃ বাড়তে থাকে।

মাসুদ গলায় পেছানো মাফলারটি নাকের ওপর তুলে দেয়। কিন্তু বার বার পড়ে যায়। চালকেরটা মাথার উপর দিয়ে বেড় টেনে কান আর গলায় এমনভাবে পেচিয়েছে সরে যাওয়ার কোন জো নেই। গায়ে তার শীতের কোন কাপড় নেই, পুরানো শার্ট একটি শরীরের সাথে আঁটসাঁট করে লাগানো। পরনে লুঙ্গি, পায়ে চপ্পল একজোড়া । রিক্সায় উঠার সময় চালক কেমন যেন শীতে কুকড়ে ছিল । কিছুক্ষন চলার পর শীত তার ভেতর থেকে যেন বেরিয়ে পড়েছে।

রিক্সা যত চলতে থাকে মাসুদের শীত তত বাড়তে থাকে। তার গায়ের ফুল হাতা সুয়েটার, গলায়, মাফলার, পরনে জীনসের প্যান্ট, পায়ে উলেন মোজা, এসবের ফাঁকে ফাঁকে শীত যেন ধীরে ধীরে ওকে কাবু করে ফেলছে। ভেতরে ভেতরে দু'একটা কম্পনও অনুভব করে সে। বাতাসে ভাসমান কুয়াশা নাকে ঢুকে যেতে চায়। মাফলারটা নাক বরাবর টেনে দেয়। তারপরও কিভাবে ঢুকে যায় বুঝতে পারে না। চোখের পাতাও ভারী ভারী লাগে। রিক্সার হুডটা তুলে দিতে চায়, টান দিয়ে ঠিক মাথা বরাবর আনতে পারে।

চালক তখন পিছনে ফিরে হাতের চাপে হুডের হুক জোড়া টাইট দিতে বলে, শীতের ভয় পাইলে শীতে আরো কামড় দিয়ে ধরে। মাসুদ তার কথার জবাব না দিয়ে বলে, তুমি একটু আস্তে চালাও । চালক গতি না কমিয়ে বলে, আস্তেইত চালাই, কুয়াশার লাইগা জোরেত চালাইতে পারি না। দেখেন না কাইটতে গিয়ে রিক্সা একটার সাথে আরেকটা লাইগতেছে ।

এই জন্যতো বলছি ধীরে ধীরে যাও, শীতও কম লাগবে । চালক প্যাডেলে চাপ দিতে দিতে বলে, আমাগো তেমন শীত নাই, তবে এই কয়দিনে খবর হইছে। মাসুদ অবাক হয়ে জানতে চায়, সত্যি কি তোমার শীত লাগে না?

চালক সীট থেকে নেমে ঢাল টানতে টানতে বলে, লাগে স্যার, সকালে রিক্সা যখন মালিকের কাছ থেকে আইনতে যাই, আর সইন্ধ্যার পর যখন ফিরাইয়া দিই তখন লাগে । কিন্তু রিক্সার সীটে বইলে শীত টীত কিচ্ছু মনে থাকে না । মাসুদের কেমন যেন অনুভূতি লাগে। সে জানতে চায়, তোমার পরিবারে কে কে আছে?

আপনাগো দোয়ায় দুই মাইয়া, দুই ছাওয়াল। তাগো শীতের কাপড় জোগাড় হইছে। তাগো মা তিন বাসায় কাজ করে। সাহেব গো পোলাপাইনের পুরান সুইটার দিয়া দিছে, আমার গায়ের কৃতাটাও । তোমার ছেলে-মেয়ের মা কত বেতন পায় ? তিন বাসায় ছয়শ টাহা । ঐ টাকায় আমাগো ঘর ভাড়া হইয়া যায় । তোমাদের সংসার কিভাবে চলে?

আমার রোজগার আছে না। দিনে কত রোজগার করতে পার? কোনদিন দেড়শ আবার কোনদিন দুইশ। ছয়জন মানুষের সংসার এই টাকা দিয়ে চলে?

চলে, আল্লায় চালায় আর কি?
মাসুদ কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থেকে জিজ্ঞেস করে, তোমার পরিবার যাদের বাসায় কাজ করে তাদের ঘরে ছেলে মেয়ে কয়জন জান?
হুঁ, হে কইছে দুইজন করে নাকি ।
তাহলে তোমাদের কেন বেশি ভেবে দেখেছো কখনো?

আল্লায় দিছে কি করুম।
ওদেরকে দেয় না ।

চালক একবার পিছনে ফিরে তাকিয়ে আবার সামনে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তারপর বলে, আমার পরিবার কথাডা কয়েকবার কইছে, আমি কানে নিই নাই । তোমার শুনা উচিত ছিল, আজ যদি তোমাদের দুইজন সন্তান হতো তাহলে অন্তঃত পেট ভরে খেতে পারতে।

ততক্ষনে রিক্সা গন্তব্যে এসে পৌঁছে। মাসুদ প্রতিদিনের চেয়ে দুই টাকা বাড়তি দেয় আজ । চালক বাড়া নিয়ে বলে, সাব কিছু মনে কইরেন না, অনেক কথা কইলাম । মনে করার কি আছে, তুমি আমার কথাটি ভেবে দেখ । চালক একটা বড় নিশ্বাস ফেলে বলে, ভাইবা আর কি হইব, যা হওনের তা তো হইয়া গেইছে ।

এইটুকুর মধ্যে রেখে আর না বাড়াও সে সময় যাত্রী একজন এসে বলে, এই রিক্সা যাবে নাকি?
চালক তখন নতুন যাত্রীর সাথে দরদাম ঠিক করে ।

মাসুদ দ্রুত পায়ে অফিসের দিকে এগিয়ে আসে। অফিসে ঢুকে দেখে কেউ আসেনি যে ক'জন এসেছে সবার নাক কান বাঁধা, জড়োসড়ো হয়ে নিজনিজ সিটে বসে আছে। মহিলা একজন এসেছে, সে চাদর দিয়ে নিজেকে জড়ানোর পর মাথা অবধি আঁচল টেনে নাকে মুখে এমনভাবে পেঁছিয়েছে তার দু'চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কিছুক্ষনের মধ্যে একে একে অফিসের সবাই চলে আসে । অন্য সময়ের মত তেমন একটা কুশল বিনিময় হয়না এখন ।

শীত যেন কথা বলার ইচ্ছাও কমিয়ে দিয়েছে। ফাইল-পত্র বের করে কাজে লেগেছে অনেকে । কিন্তু কলম যেন এগুতে চায় না। বার বার দু'হাতের তালুতে ঘষে ঘষে গতি আনতে চাইছে। অফিসের ছাড়া বাইরের লোকজন এখনও এসে পৌঁছেনি । চাকুরীজীবি মানুষেরা সবসময় সময়কে ধরতে চায়। কাজ হউক না হউক সময়মত অফিসে যাওয়া আসার এই শর্তটি ওরা পূরন করতে চায় । প্রবল বর্ষণ কিংবা দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায়ও অনেকে অফিসে আসে।

মাসুদ সময়মত আসতে পারে না। এরিমধ্যে কয়েকটা ফোন আসে। রিসিভার তুলে হ্যালো বলতেই শীতের তীব্রতা নিয়ে আলাপ হয় প্রথমে তারপর অন্য কথা। কোথায় কত ডিগ্রী তাপমাত্রা আর গতকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার কথাও আলাপ করে।

কোন পত্রিকায় নাকি সংবাদ ছেপেছে তীব্র শৈত্য প্রবাহে একশত শালিক মরে বাঁশ ঝাড়ের নীচে পড়ে আছে। সংবাদটি নিঃসন্দেহে পাখি প্রেমিকদের জন্য দুঃসংবাদ । কিন্তু প্রচন্ড শীতের তোড়ে যে অসহায় মানুষের মৃত্যুও সংখ্যা দিনে রাতে বেড়ে চলছে তার জন্য শুধু ব্যথিত হলে চলে?

একজন লোক এসে মাসুদের সামনের চেয়ারে বসে। লোকটি খুব একটা পরিচিত না তবে, আগেও কয়েকবার দেখেছে। মানুষ রিসিভার নামিয়ে রাখতে লোকটি বলে, এবার কিন্তু বিভিন্ন সংস্থা প্রচুর শীত বস্ত্র বিতরন করছে। মাসুদ বলে, তাই নাকি লোকটি নিজের জ্যাকেটটি দেখিয়ে বলে চলে, হ্যাঁ, দেখুন না, এটা আমি পেয়েছি এক এন.জি.ও থেকে। নীল রংয়ের জ্যাকেটটি খুব চমৎকার মানিয়েছে লোকটাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এটাতো স্বচ্ছল ব্যক্তিদের পাওয়া কথা নয়। তখন আরও দু'জন লোক একসাথে এসে যায়।

সে আর এই প্রসঙ্গে ভাবতে পারে না । ওদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাসুদ কয়দিন থেকে বাসা হতে বের হওয়ার আগে মনে মনে ঠিক করে নেয় ছোট বাচ্চাটির জন্য আরেক সেট শীতের কাপড় নিবে প্রায় রাতে শারমিন কথাটা যেন নতুন করে মনে করিয়ে দিয়ে বলে, বাবুর দুই সেট সুয়েটারে চলে না । এখন একটা নষ্ট করলে ধোয়ার পর তিন দিনেও শুকায় না। এরি মধ্যে অন্যটাতে বমিটমি করলে এই শীতে সুয়েটার ছাড়া রাখতে হয়। মাসুদ রাতে শারমিনের সাথে একমত হয়ে বলে, কালই নিয়ে আসব।

তোমার কাল কিন্তু শেষ হচ্ছে না । না, আগামীকাল আর ভুল হবে না ।
মাসুদ অফিসে এলে কখনো কখনো মনে পড়ে কিন্তু তখন এমন হয় উঠে গিয়ে আর কিনে আনা সম্ভব হয় না। কোন কোন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় । উঠতে চাইলে তখন কেউ না কেউ এসে পড়ে ।তখন আর উঠা যায় না। আজ দুপুরে একজন এসে বলে, বাইরে রোদ উঠেছে, অনেকে রোদে গিয়ে দাড়িয়েছে,আপনারা যাবেন না? মাসুদ মৃদু হেসে জবাব দেয়, অফিস ফেলে কিভাবে যাই, রোদতো আমাদের দেশে প্রায় প্রতিদিনই উঠে । গত তিনদিন কিন্তু সূর্যের মুখ দেখা যায়নি ।

এত কুয়াশা ঝরলে কিভাবে দেখা যায়?
লোকটি বেশিক্ষণ বসলো না। কাজ সেরে বাইরে চলে গেল, সম্ভবতঃ রোদ পোহাবে । মাসুদও এই সুযোগে ছোট বাচ্চার জন্য আর এক সেট শীতের কাপড় কিনতে বের হয় । কয়েক দোকান দেখে কিন্তু পছন্দের একটি সেটও খুঁজে পায় না। দোকানী বলে, সব বিক্রি হয়ে গেছে, সপ্তাহখানেক পর আবার নতুন মাল আসবে । রোদটা বেশিক্ষন থাকে না, ঘন্টা খানেকের মধ্যে কুয়াশার স্রোতে বিলীন হয়ে যায়।

কিন্তু সূর্যটাকে পুরোপুরি আঁড়াল করতে পারে না। সকালের দিকে মানুষ শীত আর কুয়াশা নিয়ে যত মাখামাখি করে দুপুর কি বিকেল তেমন করতে পারে না। কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এসময়ে রাতের চেয়ে দিন ছোট হয়ে পড়ে দিনের কাজ দিনে শেষ করতে সময়ের টানাটানিতে বিকেলের পর কখন সন্ধ্যা নেমে আসে বুঝাও যায় না। অবশ্য বিকেল থেকে কুয়াশা আবার এমনভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠে সাঝ-সন্ধ্যা পরখ করে নিতে হয়।

মাসুদ দিনের কাজ সারতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সোয়া পাঁচটার দিকে মসজিদে মসজিদে আযান পড়ে। এসময়ে ক্ষনিকের জন্য রাস্তাঘাট একটু ফাঁকা হয়ে পড়ে। যানবাহনেরর ব্যস্ততা কমে আসে। মাসুদ অফিস থেকে বের হয়ে রিক্সা পায় না। কিছুক্ষন ফুটপাত ধরে হাঁটে। ক্ষুদে বিক্রেতারা ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে নানা রকম জিনিষপত্র বিক্রি করে। এখন কিন্তু তেমন কেউ নেই। সবাই যেন গুটিয়ে বসে আছে। ফাঁকে ফাঁকে ছিন্নমূল মানুষেরা রাতের আশ্রমের জন্য ঠাঁই খুঁজে নিচ্ছে ।

মাসের পর মাস ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ভাসমান মানুষেরা তীব্র শীতের রাতেও মাথা গোঁজার একটুকু জায়গা করে নিতে পারে না। কোথাও পুরো পরিবার আবার কোথাও দুই সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে সন্তানদের আগলে রেখেছে । মাসুদ কোতোয়ালীর মোড়ে এসে যখন পৌঁছে তখন হটাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। আঁধারের ভেতর ফুটপাত ঘেঁষে খড়কুটোর আগুন দেখা যায়। আগুনের আলোতে নবজাতক এক শিশু দেখে যে থমকে দাঁড়ায়। মা শিশুটিকে শাড়ীর আঁচলে জড়িয়ে আগুনের পাশে বসে আছে।

কিছুক্ষন পরপর বুকে জড়ানো নবজাতককে তীব্র শীতের কামড় থেকে বাঁচানোর জন্য আগুনের উপর ঝুঁকে থাকে খানিকক্ষণ । আরেকটি শিশু বছর দু'য়েক হবে বয়স খড়কুটো আর ছেঁড়া কাগজপত্র কুড়িয়ে এনে আগুনে ফেললে আগুনের শিখা বেড়ে উঠে। তখন আগুনের আলো নবজাতকের কোমল মুখাবয়ব ছুঁয়ে পাশের বাড়ন্ত গাছটির চাল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মাসুদ অবাক নয়নে দেখে নীচু ডালে একটি শালিক পাখি মাথা কাত করে নীচের দিকে তাকিয়ে আছে। মাসুদ ঠিক বুঝতে পারে না।

পাখিটি কি নবজাতককে দেখছে নাকি আগুনের উম নিচ্ছে? কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে সে সামনের দিকে পা বাড়ায়। কয়েক কদম এগিয়ে যেতে না যেতে নতুন ভাবনায় জড়িয়ে পড়ে। রাত আরো বাড়লে বড় শিশুটি খড়কুটো আর খুঁজে পাবে না, একসময় আগুনও নিভে যাবে, তখন কি হবে? এ দিকেতো সারা দেশে শীতার্ত মানুষের কাছে শীত বস্ত্র বিতরনের প্রচারের শেষ নেই। এই নতুন শিশুটি কি এক টুকরো গরম কাপড় পাবে, নাকি শীতের তীব্র ছোবল নবজাতক আর পাখির কোমল প্রান কেড়ে নেবে। পরের দিনের পত্রিকার পাতায় শত শালিকের মৃত্যু সংবাদের মত হয়ত এই সংবাদটিও জায়গা করে নেবে।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!
close