সহিহ বুখারি শরীফের বিষয় ভিত্তিক ৭০টি বিশুদ্ধ হাদীস ও অনুবাদ

Mofizur Rahman
0

সহিহ বুখারি শরীফের (বিষয় ভিত্তিক) ৭০টি অন্যতম বিশুদ্ধ হাদীস ও অনুবাদ। 70 pure hadiths and translations based on Sahih Bukhari Sharif


সহিহ বুখারি শরীফের (বিষয় ভিত্তিক) ৭০টি অন্যতম বিশুদ্ধ হাদীস ও অনুবাদ। 70 pure hadiths and translations based on Sahih Bukhari Sharif, কিতাবুল ঈমান

(toc)

সহিহ বুখারি শরীফের বিষয় ভিত্তিক ৭০টি বিশুদ্ধ হাদীস ও অনুবাদ


عن علقمة بن وقاص الليني يقول سمعت عمر بن الخطاب رضي الله عنه على المنبر قال سمعه، رسول اللہ ﷺ يقول إنّما الأعمال بالثيات وإنما لكل امرئ ما نوى فمن كانت هجرته إلى دنيا يصيبها أو إلى امرأة ينكحها فهجرته إلى ما هاجر إليه .

১. হযরত আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়নী র. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব রা কে মিম্বরের ওপর দাড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি রাসুলুল্লাহ আমাকে বলতে শুনেছিঃ প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে- সেই উদ্দেশ্যেই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য। (সহিহ বুখারি : ১)

কিতাবুল ঈমান

عن عبد الله بن عمر بن الخطاب رضي الله عنهما قال: «سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: بني الإسلام على خمس: شهادة أن لا إله إلا الله، وأن محمدا عبد ه ورسوله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، وحج البيت، وصوم رمضان،» رواه البخاري ومسلم.

২. হযরত ইবনে ওমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত। নবী ন ইরশাদ করেন ইসলামের ভিত্তী পাঁচটি, ১. সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল, ২. নামাজ কায়েম করা, ৩. যাকাত প্রদান করা, ৪. হজ্ব আদায় করা এবং ৫. রমযানে রোযা পালন করা। (সহিহ বুখারি : ৭)

عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما عن النبي ﷺ قال المسلم من ما نهى الله عنه. سلم المسلمون من لسانه ويده و

৩. হযরত ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আমর রা হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল ইরশাদ করেন, সে-ই মুসলিম, যার জিহবা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে। (সহিহ বুখারি : ৯)

عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رجلا سأل النبي ﷺ أيالإسلام خير قال تطعم الطعام وتقرأ السّلام على من عرفت ومن لم تعرف .

৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ'স রা থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ কে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামের কোন্ কাজটি উত্তম? তিনি জবাব দিলেন, তুমি অন্নদান করবে এবং পরিচিত ও অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে। (সহিহ বুখারি : ১০) 

. عن أنس قال قال النبي ﷺ لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده وولده والنّاس أجمعين

৫. হযরত আনাস রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল মন বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা তার সন্তানাদি এবং সব মানুষের চেয়ে অধিক ভালবাসার পাত্র হই। (সহিহ বুখারি: ১৪)

عن أبي هريرة عن النبي ﷺ قال آية المنافق ثلاث إذا حدث كذب وإذا وعد أخلف وإذا اؤتمن خان .

৬. হযরত আবূ হুরায়রাহ র থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ ১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে; ২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং ৩. আমানত রাখা হলে থিয়ানাত করে। (সহিহ বুখারি : ৩২)

عن أبي هريرة قال قال رسول اللہ ﷺ من يقم ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه .

৭. হযরত আবূ হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ এর ইরশাদ করেনঃ যে ব্যাক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদর-এ ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৪)

 عن أبي هريرة أن رسول اللہ ﷺ قال من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه

৮. হযরত আবু হুরায়রা রা সূত্রে রাসুলুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রমযান মাসে আল্লাহ তাআলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহর সালাত আদায় করবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৭)

عن أبي هريرة قال قال رسول اللہ ﷺ من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذبه . 

৯. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমযান মাসে সিয়াম পালন করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।। (সহিহ বুখারি : ৩৭)

عن أبي هريرة قال قال رسول اللہ ﷺ إذا أحسن أحدكم إسلامه فكل حسنة يعملها تكتب له بعشر أمثالها إلى سبع مائة ضعف وكل سيئة يعملها تكتب له بمثلها .

১০. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ নাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ উত্তমভাবে (সত্য ও খাসি মনে) ইসলামের উপর কায়েম থাকে, তখন তার জন্য প্রত্যেক সৎ কাজের সাওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত লেখা হয়। আর তার অসৎ কাজ যা সে করে থাকে, তার অনুরূপই (মাত্র এক গুণই গুনাহ) আমলনামায় লেখা হয়, যে পর্যন্ত না সে আল্লাহ দরবারে পৌঁছে। (সহিহ বুখারি : ৪০)

কিতাবুল ইলম

عن ابن شهاب قال قال حميد بن عبد الرحمن سمعت معاوية خطيبا يقول سمعت النبي ﷺ يقول من يرد الله به خيرا يفقهه في الدين وإنّما أنا قاسم والله يعيني ولن تزال هذه الأمة قائمة على أمر الله لا يضرهم من خالفهم حتى يأتي أمر الله .

১১. হযরত হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান র থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি মু'আবিয়া রা কে বক্তৃতারত অবস্থায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। আমি তো কেবল বিতরণকারী, আল্লাহ্ই দানকারী। সর্বদাই এ উম্মত কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ্ হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, বিরুদ্ধবাদীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। (সহীহ বুখারি ৭১)


عن أنس بن مالك قال قال رسول اللہ ﷺ إن من أشراط الساعة أن يرفع العلم ويثبت الجهل ويشرب الخمر ويظهر الزنا 

১২. হযরত আনাস রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল আর বলেছেন, কিয়ামতের কিছু আলামত হলঃ ইলম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতা প্রসারতা লাভ করবে, মদপানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং যেনা ব্যভিচার বিস্তার লাভ করবে। (সহিহ বুখারি : ৮০)

عن عبد الله بن عمرو بن العاص قال سمعت رسول اللہ ﷺ يقول إنّ الله لا يقبض العلم انتزاعا ينتزعه من العباد ولكن يقبض العلم يقبض العلماء حتى إذا لم يبق عالما اتخذ الناس رؤوسا جهالا فشلوا فأفتوا بغير علم فضلوا وأضلوا .

১৩. হযরত আব্দুল্লাহ বিন জামর বিন আস রা কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে যে ইলম দান করেছেন তা তোমাদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার মত তুলে নেবেন না। বরং ইলম-ওয়ালা (বিজ্ঞ) উলামা তুলে নিয়ে ইলম তুলে নেবেন। এমতাবস্থায় যখন কেবল জাহেলরা অবশিষ্ট থাকবে, তখন লোকেরা তাদেরকেই ফতোয়া জিজ্ঞাসা করবে। ফলে তারা নিজেদের রায় দ্বারা ফতোয়া দেবে, যাতে তারা নিজেরা ভ্রষ্ট হবে এবং অপরকেও ভ্রষ্ট করবে। (সহিহ বুখারি : ১০২)

عن أبي هريرة عن النبي ﷺ قال تسموا باسمي ولا تكتنوا بكنيتي ومن رآني في المنام فقد رآني فإن الشيطان لا يتمثل في صورتي ومن كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من التار.

১৪. হযরত আবু হুরায়রাহ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ বলেছেনঃ আমার নামে তোমরা নাম রাখো এবং আমার উপনাম অনুসারে উপনাম রেখো না। আর যে আমাকে স্বপ্নে দেখে সে সঠিক আমাকেই দেখেছে। কারণ শয়তান আমার আকৃতির ন্যায় রূপ ধারণ করতে পারেন। যে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়। (সহিহ বুখারি : ১১১)

. عن أبي هريرة قال قلت يا رسول الله إنّي أسمع منك حديثا كثيرا أنساه قال ابسط رداءك فبسطته قال تعرف بيديه ثم قال ضمه فضممته فما نسيت شيئا بعده .

১৫. হযরত আবূ হুরায়রাহ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললামঃ 'হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার নিকট হতে অনেক হাদীস শুনি কিন্তু ভুলে যাই।' তিনি বললেনঃ তোমার চাদর মেলে ধর। আমি তা মেলে ধরলাম। তিনি দু'হাত খাবল করে তাতে কিছু ঢেলে দেয়ার মত করে বললেনঃ এটা তোমার বুকের সাথে লাগাও। আমি তা বুকের সাথে লাগালাম। অতঃপর আমি আর কিছুই ভুলে যাইনি। (সহিহ বুখারি : ১২০ )

কিতাবুল ওযু

عن نعيم المجير قال رقيت مع أبي هريرة على ظهر المسجد فتوضاً فقال إني سمعت النبي ﷺ يقول إن أمتي يدعون يوم القيامة غرا محجلين من آثار الوضوء فمن استطاع منكم أن يطيل غرته فليفعل .

১৬. হযরত নু'আয়ম মুজমির র. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ রা-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি উযূ করে বললেনঃ 'আমি আল্লাহর রাসূল -কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় অস্থবান করা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে। (সহিহ বুখারি : ১৩৮)

 عن أبي أيوب الأنصاري قال قال رسول اللہ ﷺ إذا أتى أحدكم الغائط فلا يستقبل القبلة ولا يولها ظهرة شرفوا أو غربوا .

১৭. হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন শৌচাগারে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার পিঠও না করে, বরং তোমরা র্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে (এই নির্দেশ মদিনার বাসিন্দাদের জন্য)। (সহিহ বুখারি : ১৪৬)

عن عبد الله بن أبي قتادة عن أبيه قال قال رسول اللہ ﷺ إذا شرب أحدكم فلا يتنفس في الإناء وإذا أتى الخلاء فلا يمس ذكره بيمينه ولا يتمسح بيمينه .

১৮. হযরত আবু কাতাদাহ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল মন বলেন, তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন। পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান হাত দিয়ে যেন শৌচকার্য না করে। (সহিহ বুখারি : ১৫৫)

عن عائشة قالت كان النبي ﷺ يعجبه الشيمن في تنعله وترجله وظهوره وفي شأنه كله .

১৯. হযরত আয়িশাহ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী ন জুতা পরা, চুল আঁচড়ানো এবং পবিত্রতা অর্জন করা তথা প্রত্যেক ভাল কাজই ডান দিক হতে আরম্ভ করতে পছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি : ১৬৯)

عن أبي هريرة قال قال النبي ﷺ لا يزال العبد في صلاة ما كان في المسجد ينتظر الصلاة ما لم يحدث فقال رجل أعجمي ما الحدث أبا هريرة قال الصوت يعني الشرطة .

২০. হযরত আবূ হুরায়রাহ রা থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ বলেছেনঃ বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত নামাজের জন্য বসে নামাজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজরত থাকে যতক্ষণ না সে হাদস করে। এক অনারব ব্যক্তি বলল, হে আবু হুরায়রা! হাদস কি? তিনি বললেন, শব্দ করে বায়ু বের হওয়া। (সহিহ বুখারি : ১৭৬)

عن ابن عباس رضي الله عنهما قال مر النبي ﷺ بقبرين فقال إنّهما ليعذبان وما يعذبان في كبير أما أحدهما فكان لا يستير من البول وأما الآخر فكان يمشي بالتميمة ثم أخذ جريدة رطبة فشقها بنصفين ثم غرز في كل قبر واحدة فقالوا يا رسول الله لم صنعت هذا - فقال لعله أن يخفف عنهما ما لم ييبسا .

২১. হযরত ইবনু 'আব্বাস রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ন দু'টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, এ দুই কবরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, কিন্তু কোন বিরাট শুনাহের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এদের একজন প্রস্রাব করার সময় আড়াল করতো না । সহীহ মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, প্রস্রাব করার পর উত্তমভাবে পাক-পবিত্রতা অর্জন করতো না। আর অপরজন একজনের কথা অন্যজনের কানে লাগাতো (চোগলখোরী করতো)। এরপর তিনি এমন খেজুরের একটি তাজা ডাল ভেঙ্গে তা দুই ভাগ করলেন এবং প্রত্যেক কবরে তার একটি অংশ গেড়ে দিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, যে পর্যন্ত ডাল দু'টি শুকিয়ে না যাবে, হয়তো তাদের শান্তি হ্রাস করা হবে। (সহিহ বুখারি : ২১৮)

٢٢. عن حذيفة قال كان النبي ﷺ إذا قام من الليل يشوص فاه

২২. হযরত হুযাইফাহ রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী এর যখন রাতে সালাতের জন্য উঠতেন তখন মিসওয়াক দ্বারা দাঁত মেজে মুখ পরিষ্কার করে নিতেন। (সহিহ বুখারি : ২৪৪)

عن عائشة زوج النبي ﷺ أن النبي ﷺ كان إذا اغتسل من الجنابة بدأ فغسل يديه ثم يتوضأ كما يتوضأ للصلاة ثم يدخل أصابعه في الماء فيخلل بها أصول شعره ثم يصب على رأسه ثلاث غرف بيديه ثم يفيض الماء على جلده كله .

২৩. হযরত আয়িশা রা থেকে বর্ণিত যে, নবী আর যখন জানবাতের গোসল করতেন, তখন প্রথমে তাঁর হাত দু'টো ধুয়ে নিতেন। তারপর নামাজ-এর উযূর মত উর্দূ করতেন। তারপর তাঁর আঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন। তারপর তাঁর উভয় হাতের তিন আঁজলা পানি মাথায় ঢালতেন। তারপর তাঁর সারা দেহের উপর পানি পৌঁছিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি : ২৪৬)

٢٤. عن عائشة قالت كنت أرجل رأس رسول اللہ ﷺ وأنا حائض .

২৪. হযরত আয়িশা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হায়েয অবস্থায় আল্লাহ্র রাসূল নন-এর মাথা আঁচড়ে দিতাম। (সহিহ বুখারি : ২৯১) 

কিতাবুস্ সালাত

عن عائشة أم المؤمنين قالت فرض الله الصلاة حين فرضها ركعتين ركعتين في الخضر والسفر فأقرت صلاة الشفر وزيد في صلاة الخضر.

২৫. হযরত উম্মুল মু'মিনীন 'আয়িশা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা মুকীম অবস্থায় ও সফরে দুই রাক'আত করে নামায ফরয করেছিলেন। পরে সফরে নামায পূর্বের মত রাখা হল আর মুকীম অবস্থায় নামায বৃদ্ধি করা হল। (সহিহ বুখারি ৩৪৩)


 عن أنس بن مالك قال قال رسول اللہ ﷺ من صلى صلاتنا واستقبل قبلتنا وأكل ذبيحتنا فذلك المسلم الذي له ذمة الله وذمة رسوله فلا تغفروا الله في ذمته .

২৬. হযরত আনাস ইবনু মালিক রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ন্যায় নামায আদায় করে, আমাদের কা'বাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করে, আমাদের যাবাহকৃত পশুর গোশত খায়, সে এমন মুসলিম যার জন্য (জান-মাল, ইজ্জাত-সম্ভ্রম রক্ষায়) আল্লাহ ও রসূলের ওয়া'দা রয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার ভঙ্গ করো না। (সহিহ বুখারি : ৩৮৪)

عن عتبان بن مالك أنّ النبي ﷺ أتاه في منزله فقال أين تحب أن أصلي لك من بيتك قال فأشرت له إلى مكان فكبر النبي ﷺ وصففنا خلقه فصلى ركعتين .

২৭. হযরত ইতবান ইবনু মালিক রা হতে বর্ণিত যে, নবী তাঁর ঘরে এলেন এবং বললেনঃ তোমার ঘরের কোন জায়গায় আমার নামায আদায় করা তুমি পছন্দ কর? তিনি বলেনঃ তখন আমি তাঁকে একটি স্থানের দিকে ইঙ্গিত করলাম। নবী তাকবীর বললেন। আমরা তাঁর পেছনে কাতার করে দাঁড়ালাম। তিনি দু'রাক'আত নফল নামায আদায় করলেন। (সহিহ বুখারি ৪১২)

 عن ابن عمر رضي الله عنهما قال قال رسول اللہ ﷺ اجعلوا في بيوتكم من صلاتكم ولا تتخذوها قبورا ..

২৮. হযরত ইবনু উমর রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করছেনঃ তোমরা তোমাদের কিছু কিছু নামায ঘরে আদায় করবে, তোমাদের ঘরগুলকে কবর বানাবে না। (সহিহ বুখারি : ৪২০ )

عن أبي قتادة السلمي أن رسول اللہ ﷺ قال إذا دخل أحدكم المسجد فليركع ركعتين قبل أن يجلس . 

২৯. হযরত আবু কাতাদাহ্ সালামী রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু'রাক'আত নামায আদায় করে নেয়।  (সহিহ বুখারি : ৪৩১))

عن أبي هريرة أن رسول اللہ ﷺ قال الملائكة تصلي على أحدكم ما دام في مصلاه الذي صلى فيه ما لم يحدث تقول اللهم اغفر له اللهم ارحـمه .

৩০. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে নামাযের পরে হাদাসের পূর্ব পর্যন্ত যেখানে সে নামায আদায় করেছে সেখানে যতক্ষণ বসে থাকে ততক্ষণ ফেরেশতাগণ তার জন্যে দু'আ করতে থাকেন। তাঁরা বলেনঃ হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ। তার উপর রহম কর। (সহিহ বুখারি : ৪৩২)

عن أبي هريرة أنه سمع رسول اللہ ﷺ يقول أرأيتم لو أنّ نهرا بباب أحدكم يغتسل فيه كل يوم خمسا ما تقول ذلك يبقي من درنه قالوا لا يبقي من درنه شيئا قال فذلك مثل الصلوات الخمس يمحو الله به الخطايا .

৩১. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসূল -কে বলতে শুনেছেন, “বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহর রাসূল বললেনঃ এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা'আলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। (সহিহ বুখারি : ৫০৩)

 عن أبي هريرة و عبد الله بن عمر أنهما حدثاه عن رسول اللہ ﷺ أنه قال إذا اشتد الحر فأبردوا عن الصلاة فإن شدة الحر من فيج جهنّم .

৩২. হযরত আবু হুরায়রা ও আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ আর বলেছেনঃ যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে নামায আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ। (সহিহ বুখারি : ৫০৮)

 عن أبي هريرة أن رسول اللہ ﷺ نهى عن صلاتين نهي عن الصلاة بعد الفجر حتى تطلع الشمس وبعد العصر حتى تغرب الشمس .

৩৩. হযরত আবু হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সান দুসময়ে নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের নামায আদায়ের) পর সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের (নামাযের) পর সূর্য ডুবা পর্যন্ত। (সহিহ বুখারি : ৫৬১)

কিতাবুল আযান

عن أنس بن مالك قال ذكروا النار والناقوس فذكروا اليهود والنصارى فأمر بلال أن يشفع الأذان وأن يوتر الإقامة .

৩৪. হযরত আনাস রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (জামা'আতে নামায আদায়ের জন্য) সহাবা-ই কিরাম রা আগুন জ্বালানো অথবা নাকুস বাজানোর কথা আলোচনা করেন। আবার এগুলোকে (যথাক্রমে) ইয়াহুদী ও নাসারাদের প্রথা বলে উল্লেখ করা হয়। অতঃপর বিলাল রা-কে আযানের বাক্য দু'বার করে ও ইকামাত এর বাক্য বিজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৫৭৬)

عن أبي هريرة أن رسول اللہ ﷺ قال إذا نودي للصلاة أدبر الشيطان وله ضراط حتى لا يسمع التأذين فإذا قضى النداء أقبل حتى إذا ثوب بالصلاة أدبر حتى إذا قضى التثويب أقبل حتى يخطر بين المرء ونفسه يقول اذكر كذا اذكر كذا لما لم يكن يذكر حتى يظل الرجل لا يدري كم صلّى .

৩৫. হযরত আবূ হুরাইরাহ্ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল বলেছেনঃ যখন নামাযের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন নামাযের জন্য ইকামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইকামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, সে কয় রাক'আত নামায আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না। (সহিহ বুখারি : ৫৮১)

عن أبي سعيد الخدري أن رسول اللہ ﷺ قال إذا سمعتم النّداء فقولوا مثل ما يقول المؤذن .

৩৬. হযরত আবূ সা'ঈদ খুদরী রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল মন বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুআযযিন যা বলে তোমরাও তাই বলবে। (সহিহ বুখারি ৫৮৪)

 عن جابر بن عبد الله أن رسول اللہ ﷺ قال من قال حين يسمع النداء اللهم رب هذه الدعوة الثانية والصلاة القائمة أن محمدا الوسيلة والفضيلة وابعثه مقاما محمودا الذي وعدته حلت له شفاعتي يوم القيامة .

৩৭. হযরত জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ই বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আযান শুনে দু'আ করে। হে আল্লাহ-এ পরিপূর্ণ আহবান ও নামাযের প্রতিষ্ঠিত মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওয়ালীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকেমে মাহমূদে পৌঁছিয়ে দিন যার অঙ্গিকার আপনি করেছেন'- কিয়ামতের দিন সে আমার শাফা'আত লাভের অধিকারী হবে। (সহিহ বুখারি : ৫৮৭)

 عن أنس بن مالك أنّ النبي ﷺ قال أقيموا الصفوف فإني أراكم خلف ظهري .

৩৮. হযরত আনাস রা থেকে বর্ণিত, নবী বলেনঃ তোমরা কাতার সোজা করে নেবে। আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদের দেখতে পাই। (সহিহ বুখারি : ৬৮৩)

 عن أبي هريرة أن رسول اللہ ﷺ قال هل ترون قبلتي ها هنا فوالله ما يخفى على خشوعكم ولا ركوعكم إنّي لأراكم من وراء ظهري . 

৩১. হযরত আবূ হুরাইরাহ্ রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল মন বলেছেনঃ তোমরা কি মনে কর যে, আমার দৃষ্টি (কেবল) কিবলাহর দিকে? আল্লাহর কসম! আমার নিকট তোমাদের ঘৃত্ত' (বিনয়) ও রুকূ কিছুই গোপন থাকে না। অবশ্যই আমি আমার পেছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। (সহিহ বুখারি : ৭০৫ )

عن سمرة بن جندب قال كان النبي ﷺ إذا صلى صلاة أقبل علينا بوجهه . 

৪০. হযরত সামুরা ইবনে জুনদুব রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম ন যখন নামায শেষ করতেন, তখন আমাদের দিকে মুখ ফিরাতেন। (সহিহ বুখারি : ৮০৫)

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول اللہ ﷺ قال من اغتسل يوم الجمعة غسل الجنابة ثم راح فكأنما قرب بدنة ومن راح في الساعة الثانية فكأنما قرب بقرة ومن راح في الساعة الثالثة فكأنما قرب كبشا أقرن ومن راح في الساعة الرابع، فكأنما قرب دجاجة ومن راح في الساعة الخامسة فكأنما قرب بيضة فإذا خرج الإمام حضرت الملائكة يستمعون الذكر.

৪১. হযরত আবু হুরায়রা রা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ আর বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমআর দিন। জানাবতের (ফরয) গোসলের মত গোসল করেছে, অতঃপর সূর্য ঢলার পর প্রথম মুহূর্তে (মসজিদের দিকে) চলেছে, সে যেন একটি উট আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে খায়রাত করেছে; আর যে দ্বিতীয় মুহূর্তে একটু পরে চলেছে, সে যেন একটি গাভী খায়রাত করেছে; আর যে তৃতীয় মুহূর্তে আরও পরে চলেছে, সে যেন শিংযুক্ত মেষ খায়রাত করেছে; আর যে চতুর্থ মুহূর্তে অর্থাৎ আরও পরে চলেছে, সে যেন একটি মুরগী খায়রাত করেছে; আর যে পঞ্চম মুহূর্তে চলেছে, সে বেন ডিম খায়রাত করেছে। যখন ইমাম বের হন তখন ফেরেশতাগণ হাজির হন, যিকর (খুতবা) শোনার জন্য। (সহিহ বুখারি : ৮৩৭)

কিতাবুুয যাকাত


عن أبي هريرة رضي الله عنه أن أعرابيا أتى النّبي ﷺ فقال ذلني على عمل إذا عملته دخلت الجنة قال تعبد الله لا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة المكتوبة وتؤدي الزكاة المفروضة وتصوم رمضان قال والذي نفسي بيده لا أزيد على هذا فلما ولى قال النبي ﷺ من سره أن ينظر إلى رجل من أهل الجنة فلينظر إلى هذا .

৪২. হযরত আবূ হুরাইরা রা হতে বর্ণিত, এক বেদুঈন নবী এর নিকট এসে নিবেদন করল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন এক আমলের কথা বলে দিন, যার উপর আমল করলে, আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বললেন, আল্লাহর ইবাদত করবে ও তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, ফরয যাকাত আদায় করবে ও রমযানের রোযা পালন করবে। সে বলল, সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন আছে, আমি এর চেয়ে বেশী করব না। তারপর যখন সে লোকটা পিঠ ফিরে চলতে লাগল, তখন নবী ন বললেন, যে ব্যক্তি জান্নাতবাসীদের কোন লোক দেখতে আগ্রহী, সে যেন এই লোকটিকে দেখে। (সহিহ বুখারি : ১৩১৬)

عن أبي هريرة قال قال رسول اللہ ﷺ من آتاه الله مالا فلم يؤدّ زگانه مثل له ماله شجاعا أقرع له زبيبتان طوقه يوم القيامة يأخذ بلهزمتيه يعني بشدقيه يقول أنا مالك أنا كنزك ثم تلا هذه الآية {ولا تحسبن الذين يبخلون بما آتاهم الله من فضله } إلى آخر الآية .

৪৩. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ বলেছেনঃ যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা'আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন, অথচ সে ঐ ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করেনি, সে ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন টাকমাথা সাপে পরিণত করা হবে। এ সাপের দু' চোখের উপর দু'টি কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ বিষাক্ত সাপ)। এরপর ঐ সাপ গলার মালা হয়ে ব্যক্তির দু' চোয়াল কামড়ে ধরে বলবে, আমিই তোমার সম্পদ, আমি তোমার সংরক্ষিত ধন-সম্পদ। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ “যারা কৃপণতা করে, তারা যেন মনে না করে এটা তাদের জন্য উত্তম বরং তা তাদের জন্য মন্দ। কিয়ামতের দিন অচিরেই যা নিয়ে তারা কৃপণতা করছে তা তাদের গলার বেড়ী করে পরিয়ে দেয়া হবে" ২ (সূরাহ্ আ-লি ইমরান ৩: ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (সহিহ বুখারি : ১৩২১)


عن حكيم بن حزام رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال اليد العليا خير من اليد السفلى وابدأ بمن تغول وخير الصدقة ما كان عن ظهر غنى ومن يستعفف يعفه الله ومن يستغن يغنه الله .

৪৪. হযরত হাকীম ইবনু হিযাম রা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ এর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উপরের হাত (দাতার হাত) নীচের হাত (গ্রহীতার হাত) অপক্ষো উত্তম। প্রথমে তাদেরকে দিবে যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে সাদকা করা উত্তম। যে ব্যক্তি (ভিক্ষা থেকে) মুক্ত থাকতে চায়, আল্লাহ্ তাকে মুক্ত রাখেন এবং যে পরমুখাপেক্ষিতা থেকে বেচে থাকতে চায় আল্লাহ্ তাকে স্বাবলম্বী করে দেন।  (সহিহ বুখারি : ১৩৪৪)

عن ابن عباس رضي الله عنهما أن رسول الله ﷺ لما بعت معاذا رضي الله عنه على اليمن قال إنك تقدم على قوم أهل كتاب فليكن أول ما تدعوهم إليه عبادة الله فإذا عرفوا الله فأخبرهم أن الله قد فرض عليهم خمس صلوات في يومهم وليلتهم فإذا فعلوا فأخبرهم أنّ الله فرض عليهم زكاة من أموالهم وترد على فقرائهم فإذا أطاعوا بها فخذ منهم وتوق كرايم أموال الناس .

৪৫. হযরত ইবনে আব্বান রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ যখন রা রা কে ইয়ামানের শাসনকর্তা হিসাবে পাঠান, তখন বলেছিলেন, তুমি আহলে কিতাব লোকদের কাছে যাচ্ছ। কাজেই প্রথনে তাদের আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দিবে, যখন তারা আল্লাহর পরিচয় লাভ করবে, তখন তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ্ দিন-রাতে তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরব করেছেন। যখন তারা তা আদায় করতে থাকবে, তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ্ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন। যা তাদের সম্পদ থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। যখন তারা এর অনুসরণ করবে তখন তাদের থেকে তা গ্রহণ করবে এবং লোকদের উত্তম মাল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। (সহিহ বুখারি : ১৩৭৩)

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال فرض رسول اللہ ﷺ زكاة الفطر صاعا من تمر أو صاعا من شعير على العبد والحر والذكر والأنثى والصغير والكبير من المسلمين وأمر بها أن تؤدى قبل خروج النّاس إلى الصلاة .

৪৬. হযরত আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ মুসলিমদের প্রত্যেক গোলাম আযাদ, পুরুষ, নারী, ছোট-বড় সকলের জন্য এক সা খেজুর', অথবা এক সা' যব সদকায়ে ফিতুর ফরয করে দিয়েছেন। এ ‘সদাক্বায়ে 'ফিতুর' ঈদুল ফিতরের নামাযে বের হবার আগেই আদায় করতে হুকুম দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি : ১৪১৫)

কিতাবুল হজ্জ

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال سئل النبي ﷺ أي الأعمال أفضل قال إيمان بالله ورسوله قيل ثم ماذا قال جهاد في سبيل الله قيل ثم ماذا قال حج مبرور.

৪৭. হযরত আবু হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম স. কে জিজ্ঞাসা করা হল- সর্বোত্তম আমল কোনটি। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মাকবুল হজ্জ। (সহিহ বুখারি : ১৪২৯)

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال قال النبي ﷺ من حج هذا البيت فلم يرفث ولم يفسق رجع كيوم ولدته أمه .

৪৮. আবু হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ্র জন্য হজ্জ আদায় করল; কিন্তু কোন যৌনাচার কিংবা পাপ করল না সে ঐ অবস্থায় ফিরে আসবে যে অবস্থায় তার মা তাকে প্রসব করেছে।” অর্থাৎ নিষ্পাপ হয়ে। (সহিহ বুখারি ১৪৩১)

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول اللہ ﷺ قال العمرة إلى العمرة كفارة لما بينهما والحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة .

৪৯. হযরত আবু হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ বলেছেনঃ একউমরাহ অন্য উমরাহর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহের কাফ্ফারা হয়। আর হচ্ছে মাবন্ধরের জান্নাত ব্যতীত কোন প্রতিদান নেই। (সহিহ বুখারি : ১৬৫৮)

ফ্যায়েলুল মদীনা

عن أنس رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال المدينة حرم من كذا إلى كذا لا يقطع شجرها ولا يحدث فيها حدث من أحدث حدثا فعليه لعنة الله والملائكة والناس أجمعين .

৫০. হযরত আনাস ইবনু মালিক রা হতে বর্ণিত যে, নবী নই বলেছেন, মদিনা এখান হতে ওখান পর্যন্ত হারাম (রূপে গণ্য)। সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না এবং এখানে কোন ধরনের অঘটন (গুনাহ, অত্যাচার ইত্যাদি) ঘটানো যাবে না। যদি কেউ এখানে কোন অঘটন ঘটায় তাহলে তার প্রতি আল্লাহ্র এবং ফেরেশতাদের ও সকল মানুষের লা'নত (অভিশাপ)। (সহিহ বুখারি : ১৭৪৬)

عن أبي هريرة رضي الله عنه يقول قال رسول الله ﷺ أمرت بقرية تأكل القرى يقولون يثرب وهي المدينة تنفي النّاس كما ينفي الكير خبث الحديد .

৫১. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল মন বলেন, আমি এমন এক জনপদে হিজরত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সকল জনপদের উপর জয়ী হবে। লোকেরা তাকে ইয়াসরিব বলে থাকে। এ হল মদিনা। তা অবাঞ্ছিত লোকদেরকে এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচা দূর করে দেয়। (সহিহ বুখারি। ১৭৫০)


عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول اللہ ﷺ قال إن الإيمان لتأرز إلى المدينة كما تأرز الحية إلى جحرها . 

৫২. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল বলেছেন, ঈমান মদিনাতে ফিরে আসবে যেমন সাপ তার গর্তে ফিরে আসে। (সহিহ বুখারি : ১৭৫৫)

عن أنس رضي الله عنه عن النّبي ﷺ قال اللهم اجعل بالمدينة ضعفي ما جعلت بمكة من البركة .

৫৩. হযরত আনাস রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে আল্লাহ! মক্কাতে তুমি যে বরকত দান করেছ, মদিনাতে এর দ্বিগুণ বরকত দাও। (সহিহ বুখারি : ১৭৬৪)

. عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال ما بين بيتي ومنبري روضة من رياض الجنّة ومنبري على حوضي . 

৫৪. হযরত আবু হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, নবী করিম হয় বলেছেনঃ আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানটি হল জান্নাতের বাগান সমূহের একটি বাগান, আর আমার মিম্বরটি হল আমারহাউয়ের উপর অবস্থিত। (সহিহ বুখারি : ১৭৬৭)

কিতাবুস সওম


 عن ابن عمر رضي الله عنهما قال صام النّبي ﷺ عاشوراء وأمر بصيامه فلما فرض رمضان ترك .

৫৫. হযরত ইবনু উমর রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীন আশূরার দিন রোযা পালন করেছেন এবং এ রোযার জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের রোযা ফরয হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি : ১৭৭১)

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول اللہ ﷺ قال الصيام جنة فلا يرفث ولا يجهل وإن امرؤ قاتله أو شاتمه فليقل إني صائم مرتين والذي نفسي بيده لخلوف فم الصائم أطيب عند الله تعالى من ربح المسك يترك طعامه وشرابه وشهوته من أجلي الصيام لي وأنا أجزي به والحسنة بعشر أمثالها .

৫৬. হযরত আবূ হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ বলেছেন, সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মুর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তাঁর সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাঁকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি রোযা পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের গন্ধের চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। রোযা আমারই জন্য। তাই এর পুরষ্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ। (সহিহ বুখারি : ১৭৭৩)

عن سهل رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال إن في الجنة بابا يقال له الريان يدخل منه الصائمون يوم القيامة لا يدخل منه أحد غيرهم يقال أين الصائمون فيقومون لا يدخل منه أحد غيرهم فإذا دخلوا أغلق فلم يدخل منه أحد .

৫৭. হযরত সাহল রা হতে বর্ণিত, নবী বলেন, জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোযা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, রোযা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। (সহিহ বুখারি : ১৭৭৫)

عن أبي هريرة رضي الله عنه يقول قال رسول اللہ ﷺ إذا دخل شهر رمضان فتحت أبواب السماء وغلقت أبواب جهنم وسلسلت الشياطين .

৫৮. হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল বলেছেন, রমাযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি : ১৭৭৮)

 عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال إذا نسي فأكل وشرب فليتم صومه فإنّما أطعمه الله وسقاه . 

৫৯. হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসূল এর থেকে ইরশাদ করছেন, তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি ভুলে গেল যে আমি রোযা অবস্থায় আছি অতঃপর পানাহার করল সে যেন তার রোযা অব্যাহত রেখে পূর্ণ করে (ভেঙ্গে না ফেলে)। কেননা আল্লাহ তা'আলা তাকে আহার করিয়েছেন।” (সহিহ বুখারি : ১৮০৯)

عن عائشة رضي الله عنها أن رسول اللہ ﷺ قال تحروا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان .

৬০. হযরত আয়িশা রা হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল মন বলেছেন, তোমরা রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর। (সহিহ বুখারি : ১৮৯০)

কিতাবুল আম্বিয়া

عن جبير بن مطعم قال قال رسول اللہ ﷺ لي خمسة أسماء أنا الكفر وأنا الحاشر الذي محمد وأحمد وأنا الماحي الذي يمحو الله يحشر الناس على قدمي وأنا العاقب والعاقب الذي ليس بعده نبئ .

৬১. হযরত জুবাইর বিন মুগ্ধইম রা কর্তৃক বর্ণিত, নবীন বলেছেন, আমার পাঁচটি নাম, আমি মুহাম্মাদ, আহমাদ। আমি মাহী (নিশ্চিহ্নকারী), যার দ্বারা আল্লাহ কুফরী নিশ্চিহ্ন করবেন। আমি হারে, যার পদপ্রান্তে মানুষের হাশর হবে। আর আমি হলাম আরেব (সব শেষে আগমনকারী), যার পরে কোন নবী নেই। (সহিহ বুখারি : ৩২৮০)

62. عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول اللہ ﷺ قال إن مثلي ومثل الأنبياء من قبل كمثل رجل بني بيتا فأحسنه وأجمله إلا موضع لبنة من زاوية فجعل الناس يطوفون به ويعجبون له ويقولون هلا وضعت هذه اللبنة قال فأنا اللبنة وأنا خاتم النبيين .

৬২. হযরত আবূ হুরায়রা রা কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ বলেছেন, আমার উদাহরণ ও আমার পূর্ববর্তী নবীগণের উদাহরণ এমন এক ব্যক্তির মতো, যে উত্তম ও সুন্দর রূপে একটি গৃহ নির্মাণ করেছে। কিন্তু এক কোণে একটি ইট পরিমাণ জায়গা ছেড়ে রেখেছে। লোকেরা তা ঘুরে-ফিরে দেখতে লাগল ও অবাক হল এবং বলতে লাগল, 'এই ইটটা স্থাপিত হয়নি কেন?' নবী জান বলেন, সুতরাং আমিই হলাম সেই ইট। আমিই হলাম। সর্বশেষ নবী। (সহিহ বুখারি। ৩২৮৩)

عن عائشة رضي الله عنها أن النبي ﷺ توفي وهو ابن ثلاث وستين .

৬৩. হযরত আয়েশা রা থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় নবী করিম এর ওফাত হয় ৬৩ বছর

 عن أبي إسحاق قال سمعت البراء يقول كان رسول اللہ ﷺ أحسن النّاس وجها وأحسنه خلقا ليس بالطويل البائن ولا بالقصير.

৬৪. হযরত বারাআ রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল -এর চেহারা ছিল মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সুন্দর এবং তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আখলাকের অধিকারী। তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না এবং বেঁটেও ছিলেন না। (সহিহ বুখারি : ৩২৯৭)

 عن أنس رضي الله عنه قال ما مسست حريرا ولا ديباجا ألين من كف النبي ﷺ ولا شممت ريحا قط أو عرفا قط أطيب من ريج أو عرف النبي ﷺ .

৬৫. হযরত আনাস রা বলেন, রাসূলুল্লাহ্ এর করতল অপেক্ষা অধিকতর কোমল কোন রেশমবস্ত্র কখনো স্পর্শ করিনি এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেহের সুগন্ধি অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধ কখনো পাইনি। (সহিহ বুখারি : ৩৩০৯)

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال ما عاب التي ﷺ طعاما قط إن اشتها: أكله وإلا تركه .

৬৬. হযরত আবূ হুরায়রা রা থেকে বর্ণিত, নবী এমন কখনো কোন খাদ্যবস্তুকে মন্দ বলতেন না। রুচি হলে খেয়ে নিতেন নতুবা ত্যাগ করতেন। (সহিহ বুখারি : ৩৩১১)

عن أنس رضي الله عنه قال أتي النبي ﷺ بإناء وهو بالزوراء فوضع يده في الإناء فجعل الماء ينبع من بين أصابعه فتوضأ القوم قال قتادة قلت لأنس كم كنتم قال ثلاث مائة أو زهاء ثلاث مائة .

৬৭. আনাস রা. হতে বর্ণিত, নবী করিম এর নিকট একটি পানির পাত্র আনা হল। তখন তিনি 'যাওয়া' নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তিনি তার হাত মোবারক ঐ পাত্রে রাখলেন আর তখনই পানি আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে উপচে পড়তে লাগল। ঐ পানি দিয়ে উপস্থিত সকলেই উযূ করে নিলেন। কাতাদা র. বলেন, আমি আনাস রা কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের লোক সংখ্যা কত ছিল? তিনি বললেন, আমরা তিনশ' অথবা তিনশ' এর কাছাকাছি ছিলাম। (সহিহ বুখারি : ৩৩১৯)

عن أنس بن مالك رضي الله عنه أنه حدثهم أن أهل مكة سألوا رسول اللہ ﷺ أن يريهم آية فأراهم انشقاق القمر .

৬৮. হযরত আনাস রা থেকে বর্ণিত যে, মক্কাবাসী কাফিররা রাসূলুল্লাহ এর নিকট মুজিযা দেখানোর জন্য দাবী জানালে তিনি তাদেরকে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করে দেখালেন। (সহিহ বুখারি : ৩৩৭৬)

 عن عبد الله رضي الله عنه أن النبي ﷺ قال خير النّاس قرني ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم ثم يجيء قوم تسبق شهادة أحدهم يمينه ويمينه شهادته .

৬৯. হযরত আবদুল্লাহ রা হতে বর্ণিত যে, নবীন বলেন, আমার উম্মাতের সর্বোত্তম মানুষ আমার যুগের মানুষ (সাহাবীগণ)। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগ। অতঃপর তৎপরবর্তী যুগ। অতঃপর এমন লোকদের আগমন হবে যাদের কেউ সাক্ষ্য দানের পূর্বে কসম এবং কসমের পূর্বে সাক্ষ্য দান করবে। (সহিহ বুখারি : ৩৩৮৯)

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال كنا نخير بين الناس في زمن النبي الله فتخير أبا بكر ثم عمر بن الخطاب ثم عثمان بن عفان رضي

৭০. হযরত ইবনু উমর রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ এর যামানায় সাহাবীগণের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদা নিরূপণ করতাম। আমরা সর্বাপেক্ষা মর্যাদা দিতাম আবূ বকর রা কে তাঁরপর উমর ইবনু খাত্তাব রা কে, তারপর উসমান ইবনু আফফান রা কে। (সহিহ বুখারি : ৩৩৯৩)

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!