নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity

Mofizur Rahman
0

নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity

নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity

পৰ্দা হলো নারী জাতির সতিত্ব রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম


فِيهِمَا عَيْن تَجْرِينِ (50) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تكلبي (51) فِيْهِمَا مِنْ كُلِ فَاكِهَةٍ زَوْجُنِ (52) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِ بنِ (53) متكين على فُرْشِ بَطَابتهَا مِنْ اسْتَبْرَقٍ * وَجَنَا الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ 54 فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تكذبن (55) فِيْهِنَّ قُصِرتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنَّسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌ (56 فَبِأَيِّ الَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبُنِ (57) كَأَنَّهُنَّ الْيَاقُوتُ وَالْمَرْجَانُ (58) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِينِ (59) هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ (60) فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِينِ

তরজমা:

উভয় জান্নাতের মধ্যে দুটি প্রস্রবণ বহমান। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? উভয় জান্নাতে প্রত্যেক ফল দু' দু' প্রকারের হবে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করাবে? (জান্নাতিয়া) এমনসব বিছানার উপর হেলান দিয়ে বসবে, যেগুলোর আস্তরন মোটা রেশমের, এবং উভয় জান্নাতের ফলমূল তাদের নিকটবর্তী হবে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? তথায় থাকবে এমন স্ত্রীগণ, যারা স্বামী ব্যতীত অন্য কারো প্রতি চক্ষু উঁচু করে দৃষ্টিপাত করে না। পূর্বে তাদেরকে স্পর্শ করেনি কোন মানব এবং না কোন জীন। সুতরাং তোমারা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? তারা (ঐসব স্ত্রী) যেন পদ্মরাগ ও প্রবাল। সুতারাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? উত্তম কাজের প্রতিদান কিন্তু উত্তম কাজই। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? এবং উপরোক্ত ওই দুটি ব্যতিত আরো দুটি জান্নাত রয়েছে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? (এ জান্নাত দুটির মধ্যে) গাড় সবুজ থেকে কালো বর্ণের ঝলক বিচ্ছুরিত হচ্ছে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? উভয় জান্নাতে দুটি প্রস্রবণ রয়েছে উচ্ছলিত। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ কে অস্বীকার করাবে? (সুরা আর-রাহমান, ৫০-৬০ নং আয়াত)

আয়াত সম্বলিত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা


فيهما میدان تجریان
মহান আল্লাহর পবিত্র বাণী "উভয় জান্নাতের মধ্যে দুটি প্রস্রবণ বহমান থাকবে। এর ব্যাখ্যায় মুফাসসেরীনে কেরাম উল্লেখ করেছেন উল্লেখিত দুটি প্রশ্রবনের নাম: তাসনীম ও সালসাবীল যা মেশক এর পর্বত থেকে প্রবাহিত হয়। আল্লাহর ভয়ে আর্তনাদ আহাজারী করত:

যাদের চক্ষুদ্বয় অশ্রুধারা প্রবাহিত করে তাদের জন্য এ তাসনীম ও সালসাবিল। (রুহুল বায়ান শরিফ) প্রকৃত প্রস্তাবে বেহেশত হলো মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের অপরিসীম ও অকল্পনীয় নেয়ামত-রহমত আর কৃপা-করুণার কেন্দ্রস্থল। পার্থিব জগতে থাকাবস্থায় বেহেশতের নেয়ামতরাজির অনুধাবন কিংবা অনুমান করা সম্ভবপর নয়। যেমন, কুরআনে করীমে এরশাদ হয়েছে- 
فلا تعلم نفس ما أخفي لهم من قرة أعين 
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি জানে না যা বেহেশতবাসীর জন্য গোপন রাখা দরসে কোরআন হয়েছে- যা চক্ষু জুড়ায়। (সুবহানাল্লাহ) সাইয়্যেদুনা হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলে কারিম রউফুর রহিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-  قال الله تعالى اعددت لعبادي  الصالحين ما لاعين رأت ولا أذن سمعت ولا  অর্থাৎ মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন-আমি আল্লাহ আমার সৎকর্মশীল বান্দাগণের জন্য এমন সব নেয়ামত তৈরী করে রেখেছি যা কোন চক্ষু কোন দিন দেখেনি, কোন কান যার বর্ণনা শ্রবণ করেনি এবং কোন ব্যক্তির অন্তর যা কল্পনা করেনি। এরশাদ করেছেন-আমি আল্লাহ আমার সৎকর্মশীল বান্দাগণের জন্য এমন সব নেয়ামত তৈরী করে রেখেছি যা কোন চক্ষু কোন দিন দেখেনি, কোন কান যার বর্ণনা শ্রবণ করেনি এবং কোন ব্যক্তির অন্তর যা কল্পনা করেনি। (ছহীহ বুখারী ও মুসলিম শরিফ)

সাইয়্যেদুনা হযরত আবু ছায়ীদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত অন্য এক রেওয়ায়তে রাসূলে আকরাম নূরে মুজাসসাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-একজন নিম্নস্তরের বেহেশতীর জন্য আশি হাজার খাদেম এবং বাহাত্তর জন স্ত্রী দান করা হবে। এবং মহা মূল্যবান মনি-মুক্তা ও এয়াকুত পাথরের দ্বারা শানদার আকর্ষণীয় কক্ষ নির্মাণ করা হবে তাঁর জন্য। সুবাহানাল্লাহ (তিরমিজি শরিফ)

সাহাবীয়ে রাসূল হযরত আবু ছায়ীদ খুদরী ও সাইয়্যেদুনা হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রাসূলে খোদা আশরাফে আম্বিয়া সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-অর্থাৎ বেহেশতিগণ বেহেশতে অবস্থান গ্রহণের পর একজন ফেরেশতা তাদেরকে সম্বোধন করে বলবে- হে জান্নাতীরা! তোমাদের জন্য এ বিষয় নিশ্চিত করা হলো যে, তোমরা সর্বদা সুস্থ- স্বাভাবিক থেকো, কখনো রোগাক্রান্ত হবে না। তোমরা স্থায়ীভাবে জীবিত থেকো, কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। তোমরা চির তারুণ্যের অধিকারী হও, কখনো বৃদ্ধ হবে না। এবং তোমরা চির আমোদ-আহলাদে মশগুল হও, কখনো পেরেশান-অবসাদগ্রস্থ হয়ো না। আরো অসংখ্য রেওয়ায়তের মাধ্যমে রাসূলে আকরম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেহেশতের অপরিসীম ও অপরিমেয় অনুগ্রহ রাজির বর্ণনা দিয়েছেন। যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অনুগত বাধ্যগত মুমিন নর-নারীর জন্য  তৈরী করে রেখেছেন। যার কিঞ্চিত বর্ণনা উপরে বিবৃত হয়েছে। মূলত: জাগতিক জীবন হলো ঈমানদারের জন্য পরীক্ষাগার। সাধনার কেন্দ্রস্থল। সর্বক্ষণ শরিয়তের সীমারেখার সুনিয়ন্ত্রিত থেকে চিরস্থায়ী আখিরাতের জন্য নেক আমলের সঞ্চয় করাই মুমিনের ঈমানী কর্তব্য। শরিয়তের গন্ডি থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে শয়তারেন বিস্তৃত ফাদে নিক্ষিপ্ত হওয়া। চিরস্থায়ী পরকালীন জীবন কে ধ্বংস করা।

فِيهِنَّ فَاصِرَاتُ الطَّرْف لَمْ يُعيلُهُنَّ إِنَّسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَان 
উপরোক্ত আল্লাহর পবিত্র বাণী “তথায় থাকবে এমন স্ত্রীগণ। যারা স্বামী ব্যতীত অন্য কারো প্রতি চক্ষু উঁচু করে দৃষ্টিপাত করে না। পূর্বে তাদেরকে স্পর্শ করেনি কোন মানব কিংবা জিন।" এর ব্যাখ্যায় মুফাসসেরীনে কেরাম উল্লেখ করেছেন-আলোচ্য আয়াতে মহান আল্লাহ বেহেশতি স্ত্রীগণের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। তাঁরা নিজেদের জন্য নির্ধারিত স্বামী ব্যতীত অন্য কোন বেগানা অপরিচিত পুরুষের প্রতি দৃষ্টিপাত করেনা। বরং সর্বদা তারা নিজেদেরকে স্বামীর সান্নিধ্য-সেবা কিংবা আনুগত্যের আওতায় সীমাবদ্ধ রাখে। ফলে তাদেরকে অন্য কোন মানব কিংবা জিনের কোনরূপ দেখা কিংবা স্পর্শ করার সুযোগ হয় না। তাই তাদের নিরাপত্তার কোনরূপ বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ থাকেনা। এর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নারী জাতির পর্দাশীল হওয়ার ও পর্দা প্রথার প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতার প্রতি আলোকপাত করেছেন। পর্দা প্রথা বেহেশতী নারীদের বৈশিষ্ট্য এবং বেহেশতী হওয়ার বড় অবলম্বন নারী জাতির জন্য। এই পর্দাশীলতা নারীকুলের জন্য নির্লজ্জতা দমন ও সতীত্ব সংরক্ষণের বড় মাধ্যম। সুরা আন-নূর এর ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ মুমিন নারীদের কে সম্বোধন করে এরশাদ। করেছেন- অর্থাৎ (ওহে রাসূল! আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন সাধারণত: যা প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।

(সূরা নূর এর ৩১ নং আয়াত এর প্রথম অংশ) এ আয়াতের আলোকে ফিকহশাস্ত্র বিশারাদ ফুকাহায়ে কেরাম বলেন মহারাম ব্যতীত কোন পুরুষের প্রতি দৃষ্টিপাত করা নারীদের জন্য হারাম। অনেক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন-নারীদের জন্য মহারাম নয়, এমন পুরুষের প্রতি দেখা সর্বাবস্থায় হারাম। কামভাব সহকারে দৃষ্টিপাত করুক অথবা কামভাব ছাড়া হোক। এর প্রমাণ হলো- হযরত উম্মে সালমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা কর্তৃক বর্ণিত হাদিস। যাতে এরশাদ হয়েছে - একদিন উম্মুল মুমেনিন হযরত উম্মে সালমা ও হযরত মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা উভয়ে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামার সঙ্গে ছিলেন। হঠাৎ অন্ধ সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু আনহু তথায় আগমন করলেন। এই ঘটনার সময়কাল হলো পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পর। রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁদের উভয়কে পর্দা করতে আদেশ করলেন। হযরত উম্মে সালমা রা. আরজ করলেন, ওহে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তিনি তো অন্ধ, আমাদেরকে দেখতে পাবে না। এবং আমাদেরকে চেনেন না তিনি। আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা তো অন্ধ নও, তোমরা তাকে দেখছ। (আবু দাউদ ও তিরমিজি)

আরবি ভাষায় " মানে এমন বস্তু, যদ্বারা মানুষ নিজেকে সুসজ্জিত ও সুদৃশ্য করে। এটা উৎকৃষ্ট বস্তু হতে পারে এবং অলংকারও হতে পারে। এসব বস্তু যদি কোন নারীর দেহে না থাকে পৃথকভাবে থাকে তবে সর্বসম্মতিতে এগুলো দেখা পুরুষের জন্য হালাল। যেমন, বাজারে বিক্রির জন্য মেয়েলি পোষাক ও অলংকার ইত্যাদি দেখায় কোন দোষ নেই। তাই অধিকাংশ তাফসির বিশারদ আলোচ্য আয়াতে dj এর অর্থ নিয়েছেন সাজ-সজ্জার স্থান। অর্থাৎ যে সব অঙ্গে সাজ-সজ্জার অলংকার ইত্যাদি পরিধান করা হয়। অতএব আয়াতের অর্থ এই যে, সাজ- সজ্জার স্থান সমূহ প্রকাশ না করা মহিলাদের উপর ওয়াজিব। (রুহুল মায়ানী শরীফ)

আল্লামা বায়জাভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি ও তাফসীরে খাযেন এ আয়াতের তাফসিরে বলেছেন নারীর আসল বিধান এই যে, সে তার সাজ-সজ্জার কোন কিছুই প্রকাশ করবে না।


নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity - নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity - নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity - নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity - নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity - নারীর সতিত্ব রক্ষায় পর্দা বা হিজাবের গুরুত্ব - Importance of veil or hijab in protecting women's chastity

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!
close